বাংলাদেশের রোহিঙ্গাদের জন্য ৫.৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে জাপান
বাংলাদেশের কক্সবাজার ও ভাসান চরে রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়ন এবং আশ্রয়কেন্দ্রের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থায় (আইওএম) পাঁচ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান সরকার।
আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এবং আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন আবদুসাত্তর এসোয়েভ এ বিষয়ে একটি এক্সচেঞ্জ অব নোটস (দ্বিপক্ষীয় বেসরকারি চুক্তি) সই করেছেন।
এ সময় বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেছেন, জাপান রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনসহ টেকসই সমাধানের জন্য কাজ চালিয়ে যাবে এবং শরণার্থী ও স্বাগতিক সম্প্রদায়ের জন্য উন্নত জীবনযাত্রার জন্য আইওএমসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, ‘এই সংকটে টেকসই সমাধান খুঁজে বের করা আমাদের জন্য একটি মুক্ত এবং স্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিকের ধারণার জন্য সহায়ক হবে।’
ইওয়ামা আশা প্রকাশ করেন জাপান সরকারের সহায়তা রোহিঙ্গা এবং স্বাগতিক উভয় সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার উন্নতি ঘটাবে।
ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, ‘গত মাসে আমার শেষ কক্সবাজার সফরের সময় আইওএম পরিচালিত রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্রসহ আইওএম-এর পরিশ্রমী প্রচেষ্টায় আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম।’
আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন আবদুসাত্তর এসোয়েভ বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের ষষ্ঠ বছরে চলছে; আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এই দুর্বল জনগোষ্ঠীকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়, তারা এখনও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি। আমরা জাপান সরকারের কাছে তাদের অব্যাহত সহায়তার জন্য অত্যন্ত কৃতজ্ঞ, যা আইওএম বাংলাদেশকে কক্সবাজার এবং ভাসান চরে দুর্বল রোহিঙ্গা ও হোস্ট সম্প্রদায়কে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা দিতে সাহায্য করবে। এই সহায়তা আরও ভাল বসতি, সুরক্ষা এবং জীবিকার সুযোগ প্রদান নিশ্চিত করবে।’
ঢাকায় জাপান দূতাবাস সোমবার বলেছে, ‘কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়গুলো পর্যাপ্ত আশ্রয়ের অভাবের কারণে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন; যেখানে তাদের গোপনীয়তা, নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও মর্যাদা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়াও ভাসান চরে জীবিকার সুযোগ যেমন- অ্যাকুয়াকালচার, ছোট গবাদি পশু পালন, বৃত্তিমূলক এবং দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ আরও বাড়াতে হবে। দ্য প্রজেক্ট ফর প্রমোটিং শেল্টার আপগ্রেড অ্যান্ড কমিউনিটি বিল্ডিং ইন ভাসান চর অ্যান্ড কক্সেস বাজার ডিস্ট্রিক্ট’-শিরোনামের প্রকল্পটি কক্সবাজার ক্যাম্প এবং হোস্ট সম্প্রদায়ের ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থান, সুরক্ষা এবং মনোসামাজিক কার্যকলাপের সুযোগ বাড়াতে সক্ষম করবে। এবং ১১ হাজার ৫০০টিরও বেশি পরিবার আশ্রয়ের আপগ্রেড ও রক্ষণাবেক্ষণ সহায়তা পাবে।’
সাইট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সাইট ডেভেলপমেন্ট (এসএমএসডি) প্রকল্পটির কাজের মাধ্যমে ক্যাম্পের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। প্রকল্পটি ভাসান চরে উন্নত জীবিকার সুযোগের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের, বিশেষ করে নারী ও যুবকদের আত্মনির্ভরশীলতাকে শক্তিশালী করবে।
২০১৭ সালের আগস্টে জরুরি অবস্থার শুরু থেকেই, জাপান বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তার ব্যাপারে সমর্থন জানিয়ে আসছে এবং এবারের এই অর্থায়নের মাধ্যমে আইওএম ও অন্যান্য জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশে এনজিওগুলোতে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি সহায়তা করেছে।