‘বাংলাদেশ থেকে তালেবানে যোগ দিতে গিয়ে কিছু মানুষ ভারতে গ্রেপ্তার’
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশে একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে—তালেবানের পক্ষ থেকে আফগানিস্তানে যুদ্ধে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। আর, বাংলাদেশ থেকে কিছু মানুষ এরই মধ্যে তালেবানের সঙ্গে যোগদানের জন্য উদ্বুদ্ধ হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকীর আগের দিন আজ শনিবার ধানমণ্ডি ৩২-এ আয়োজিত নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার সময় সাংবাদিকদের এ কথা জানান মোহা. শফিকুল ইসলাম।
মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি—কিছু মানুষ আফগানিস্তানে যাওয়ার চেষ্টাকালে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। আর, কিছু মানুষ হেঁটে বিভিন্নভাবে আফগানিস্তানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।’
‘জঙ্গিরা সাইবার ওয়ার্ল্ডে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তৎপর রয়েছে। জঙ্গিদের বিভিন্ন কর্মতৎপরতা পর্যবেক্ষণে ডিএমপিসহ বাংলাদেশের সব গোয়েন্দা সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করছে’, যোগ করেন মোহা. শফিকুল ইসলাম।
এ ছাড়া মোহা. শফিকুল ইসলাম জানান, সাইবার ওয়ার্ল্ড জঙ্গিদের কর্মকাণ্ডের ওপর সাইবার পেট্রোলিং-এর মাধ্যমে নজরদারী অব্যাহত রেখেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
এ সময় মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আগামীকাল রোববার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদৎবার্ষিকী। আপনারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ করবেন। এবং আপনাদের মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক পরিধান ব্যতীত কাউকে ভেন্যুতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। যত দ্রুত সম্ভব শ্রদ্ধা জানিয়ে ভেন্যু ত্যাগ করতে হবে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আগস্ট মাস বাঙালি জাতির জন্য একটি অভিশপ্ত মাস। জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারকেই শুধু হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি ঘাতকেরা। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে ২১ আগস্ট গ্রেনেট হামলা করা হয়েছিল।’
মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ধানমণ্ডি ৩২ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা প্রত্যেক ব্যক্তিকে চেকপোস্টে আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ভেন্যুতে প্রবেশ করানো হবে। প্রধানমন্ত্রী যতক্ষণ ভেন্যুতে অবস্থান করবেন, ততক্ষণ কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বঙ্গবন্ধু যাদুঘর ও বনানী কবরস্থান পুরোটাই সিসিটিভির আওতায় থাকবে এবং আমরা এই দুটি ভেন্যু ডিএমপির ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করব। এ ক্ষেত্রে সবাই কর্তব্যরত পুলিশকে সহযোগিতা করবেন।’
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘শোক দিবস উপলক্ষে পুরো মহানগরীজুড়ে অজস্র রাজনৈতিক সংগঠন দোয়া মাহফিলের আয়োজন করবে। সব মিলিয়ে ঢাকা মহানগরজুড়ে আমাদের জাতীয় শোক দিবসের যে কর্মসূচি থাকবে, সেটি যাতে যথাযথ মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে উদ্যাপিত হয়, সে ব্যাপারে আমরা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে মহানগরীজুড়ে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছি।’
এ সময়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) কৃষ্ণ পদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপপুলিশ কমিশনারগণসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।