বাংলাদেশ রবীন্দ্রনাথকে পূর্ণতা দিয়েছে : সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে আয়োজিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে আজ রোববার সভাপতির বক্তব্য দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। ছবি : সংগৃহীত

সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ মূলত আমাদের পূর্ববঙ্গের। কারণ পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশে অবস্থান তাঁকে পরিপূর্ণ রবীন্দ্রনাথ করেছে, মাটি ও মানুষের সঙ্গে নিবিড় আত্মীয়তার বন্ধনে বেঁধেছে।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে আয়োজিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে আজ রোববার সভাপতির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী খালিদ এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

প্রতিমন্ত্রী খালিদ বলেন, ‘এদেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে কবির স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন স্থাপনা। জমিদারি পরিচালনা করতে এসে এসব জায়গায় থেকেছেন কবি। রচনা করেছেন তাঁর মহামূল্য সাহিত্যকর্ম।’

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ও বাঙালির শৈল্পিক অহঙ্কার। প্রতিভা ও শ্রমের যুগলবন্দি সম্মিলনে তিনি কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, নাটক, শিশুসাহিত্য, জীবনী, শিক্ষাভাবনা ইত্যাদি সকল শাখায় সাফল্যের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করেছেন, বাংলা সাহিত্যকে করেছেন ঐশ্বর্যমণ্ডিত।’

সংগীত ও চিত্রকলায় বিশ্বকবির অবদান তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নোবেল পুরস্কার এনে দিয়ে বাংলা ভাষাকে, বাংলা সাহিত্যকে, বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে সম্মানের আসনে বসিয়েছেন।’

১৮৯১ থেকে ১৯০১ সালের মধ্যে অল্প বিরতিতে কবি নিয়মিত শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে অবস্থান করেছেন। এ বাড়িতে বসেই কবি রচনা করেছেন তাঁর অমর সৃষ্টি সোনারতরী, চিত্রা, চৈতালী, কথা ও কাহিনি, ক্ষণিকা, নৈবেদ্য ও খেয়া কাব্যগ্রন্থের অধিকাংশ কবিতাসহ অনেক উল্লেখযোগ্য রচনা।

কবিগুরুর নোবেল জয়ের হাতিয়ার ‘গীতাঞ্জলি’র ইংরেজি অনুবাদও শুরু করেন এখানেই।

প্রধান অতিথি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিবছর রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী নতুনের বার্তা নিয়ে আসে, যা কালের আবর্তে কখনো মলিন হয় না। প্রাণে নিয়ে আসে উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা ও উচ্ছলতা।’

স্পিকার বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশের সৌন্দর্য মুগ্ধ হয়েছেন, রচনা করেছেন—আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটিকে আমাদের জাতীয় সংগীত হিসাবে নির্বাচন করেছেন।’

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘বাঙালির আবেগ-অনুভূতি, সুখ-দুঃখ, প্রেম-বিরহ, আনন্দ-বেদনা প্রভৃতি স্থান খুঁজে পায় রবীন্দ্র লেখনীতে।’

শিরীর শারমিন বলেন, ‘সত্য ও সুন্দর সব সময় বিরাজ করে’—রবীন্দ্রনাথ এটি ধারণ করতেন।’

স্পিকার বলেন, ‘বিশ্বায়নের এ যুগে যে সংকট, অশান্তি, যুদ্ধাবস্থা, সমাজের সকল অনাচার-অবিচার দূরীকরণ এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমাদের কবির কাছ থেকে অনেক কিছু জানার ও শেখার রয়েছে।’

স্পিকার তাঁর বক্তব্যে কবির লেখনী থেকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন প্রজন্মকে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ। স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।

স্মারক বক্তৃতা দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর সনৎ কুমার সাহা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। পরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।