বান্দরবানে আ.লীগের বিক্ষোভ, গুলিবিদ্ধ চারজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর

Looks like you've blocked notifications!
বান্দরবানের জামছড়িতে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগনেতা এ কে এম জাহাঙ্গীর। ছবি : এনটিভি

বান্দরবানের জামছড়িতে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতিকে হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ করেছে নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে জামছড়ি এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে রেখেছে ব্যবসায়ীরা। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের পাহাড়ি গ্রামগুলোতেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরমধ্যে নিহতদের সৎকার সম্পন্ন করেছে পরিবার। হত্যার ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। হত্যার সঙ্গে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জড়িত। জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত একটি গ্রুপ হামলাটি করেছিল বলে জেনেছি। কিন্তু কারা সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে বান্দরবান শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে বেলা ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসলাম বেবী, আওয়ামী লীগনেতা আব্দুর রহিম চৌধুরী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, পৌর শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি অমল কান্তি দাস, পৌর কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসলাম বেবী বলেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমার বাহিনী এই হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। গত বছরও আওয়ামী লীগের বেশকয়েক নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করা হয়। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

বান্দরবানের জামছড়িতে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টার দিকে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন। এ সময় আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে একজন বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরো পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন।

গুলিতে নিহত হন রাজবিলা ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচুনো মারমা (৫৪) এবং আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বাখোয়াই মারমা (৬৩)।

আহতরা হলেন রাজবিলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য উচ থোয়াই (৬৫), যুবলীগ নেতা মংক্যা চিং মারমা (২৫), যুবলীগ নেতা হ্লামং চিং (৩০), ক্যাপো মং (৪৫) এবং প্রতিবন্ধী আধাসী (২৬)।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নে জামছড়িতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপের ১০ থেকে ১২ জন সদস্য এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।