বান্দরবানে ছয়জনকে হত্যা : পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর
বান্দরবানে ব্রাশফায়ারে নিহত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস-এমএন লারমা) শীর্ষ নেতাসহ ছয়জনের নিহতের ঘটনায় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে আজ বুধবার সন্ধ্যায় ছয়জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, হত্যকাণ্ডের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার বিষয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে পুলিশের আলাপ হয়েছে। ছয়জনের আত্মীয়-স্বজনরা পরস্পরের সঙ্গে আলাপ করে মামলার বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুলিশ মামলা দায়ের করবে। পরিবারের কেউই বাদী না হলে সেক্ষেত্রে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।
নিহত রতন তঞ্চঙ্গার স্ত্রী মিনিপ্রু বলেন, ‘ময়নাতদন্তের পর লাশ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। তাঁকে রোয়াংছড়িতে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাব। ধর্মীয় রীতি-রেওয়াজ অনুসরণ করে সৎকার করা হবে। রতন তঞ্চঙ্গার সংগঠনের পাঁচজন নেতাকর্মীর লাশ নেওয়া হবে খাগড়াছড়ি জেলায়। মামলার বিষয়ে আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।’
জেএসএস-এমএন লারমা সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, ‘সংগঠনের বান্দরবান জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক উবামং এবং নিহতদের আত্মীয়-স্বজনরা মর্গে লাশ গ্রহণ করতে গেছেন। আইনি পক্রিয়া শেষে লাশগুলো হস্তান্তর করা হলে নিহত পাঁচজনের লাশ খাগড়াছড়ি জেলায় নিয়ে আসা হবে। মামলার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। লাশ সৎকারের পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার হয়তো মামলাটি করা হবে।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য ও জনসংহতি সমিতির মূল সংগঠন (সন্তু লারমা) গ্রুপের নেতা সাধুরাম ত্রিপুরা মিল্টন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত, বিষয়টি বলতে পারছি না। তবে এটি রাজনৈতিক, আধিপত্য এবং স্বার্থের দ্বন্দ্বের ফসল মনে করছি। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।’
গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বান্দরবান সদরের রাজবিলা ইউনিয়নের বাঘমারা বাজারপাড়া এলাকায় ব্রাশফায়ারে জেএসএস-এমএন লারমা গ্রুপের ছয়জনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি বিমল কান্তি চাকমা (৬৮), উপদেষ্টা চিংথোয়াইয়াং মারমা ডেবিট (৫৬), বান্দরবান জেলা কমিটির সভাপতি রতন তঞ্চঙ্গা (৫০), যুব সমিতির সদস্য রবিন্দ্র চাকমা মিলন (৫০), রিপন ত্রিপুরা জয় (৩৫) ও জ্ঞান ত্রিপুরা দিপেন (৩২)।
নিহতদের মধ্যে ডেবিট বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার বাসিন্দার। অন্যরা সবাই খাগড়াছড়ির পানছড়ি, মানিকছড়ি, মহালছড়ি ও গুইমারা উপজেলার বাসিন্দার।
এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন সংগঠনটির সদস্য খাগড়াছড়ির নিরু চাকমা (৪২), বিদ্যুৎ ত্রিপুরা (৩৩) ও বাঘমারার বাসিন্দা এক কলেজছাত্রী।