‘বাপেক্সকে সারা দেশ দিয়ে রেখেছি, বাপেক্স বসে আছে’

Looks like you've blocked notifications!
বাপেক্সের সেমিনারে বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ছবি : এনটিভি

তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার শ্লথ গতির চরম সমালোচনা করলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘এই দুই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে না।’ যার প্রভাবে অর্থনীতি সংকটের মধ্যে পড়ছে বলে মনে করেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাপেক্সের কাছে সারা বাংলাদেশ দিয়ে রেখেছি। কিন্তু বাপেক্স হাতে নিয়ে বসে আছে। যদি প্রতিবছরই বলি, বলে, হ্যাঁ স্যার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আপনাদের অক্ষমতার দায় সরকার নেবে না।’

আজ রোববার খনিজ সম্পদ আহরণে বাপেক্স আয়োজিত সেমিনারে এসব সমালোচনা করেন প্রতিমন্ত্রী। বাপেক্সের কর্মকর্তাদের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘আপনাদের কথাবার্তা দুঃখজনক।’

গত ৩০ বছরের  বাপেক্স হাজার হাজার লাইন কিলোমিটার সারভে করেছে, একের পর একের পর এক গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে, অথচ হাতে গোনা কয়েকটি কূপ খনন করার অনুমোদন পেয়েছে। বাপেক্সে অনুসন্ধানকৃত অনেক কূপ নানা চ্যালেঞ্জের কারণে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এসব কূপে কিংবা সম্ভাব্য এলাকায় নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধানের গুরুত্ব দেওয়া এবং নতুন পরিকল্পনার কথা বাপেক্স তুলে ধরে এই সেমিনারে।

একপর্যায়ে খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী চরম সমালোচনা করেন এই প্রতিষ্ঠানের। তাদের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিদেশ থেকে কস্টলি গ্যাস আনার থেকে নিজের গ্যাসের এক্সপ্লোরেশনের জায়গাটা আরো বেশি বড় করতে চাই। গ্যাসের চাহিদা প্রতিবছর বাড়ছে। আমাদের উপায় থাকছে না গ্যাপটা পূরণ করার; বাইরে থেকে গ্যাস নিয়ে এসে। কিন্তু আপনারা যদি দেশের মধ্যে থেকে কাজ না করেন, নিজেদের এত সম্ভাবনা থাকা অবস্থায়; সাপের কামড়ের ভয়ে ওখানে যাবেন না, এটা তো হতে পারে না। এটা আপনাদের কাছে চ্যালেঞ্জ হতে পারে না। আপনাদের কথাবার্তা দুঃখজনক।’ 

গ্যাসের সংকটের কারণে গত জুনে এক লাফে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল প্রায় ৩২ শতাংশ। গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে বাড়তি দামে এলএনজি গ্যাস আমদানিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এমন সংকটের মধ্যেও দেশি সংস্থা বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার প্রাকৃতিক সম্পদ উৎপাদনে সফলতা না থাকায় দেশের সম্পদ আহরণের ভার বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে যাচ্ছে বলে জানান নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘আমরা ডেসকো, ডিপিডিসির প্রচুর লোককে রিভিজিট করেছি। আমরা কিন্তু চেষ্টা করছি এখানেও রিভিজিট করতে। আপনারা আমার কথা বুঝতে পারছেন হয়তো। আমাদের কাজের লোক দরকার, রিস্ক নেওয়ার লোক দরকার, সিদ্ধান্ত নেওয়ার লোক দরকার। নইলে আপনাদের কাজ থাকবে না, বিদেশি কোম্পানির কাছে চলে যাবে।’

প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে দুই প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির মাধ্যমে আরো দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মোহাম্মদ আবদুল হান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘নতুন যে টেকনোলজি এসেছে তা অ্যাডপ্ট করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানি থেকে প্রস্তাব এসেছে, তাদের সহযোগিতা নিতে পারি অথবা নিজেরা উদ্যোগ নেওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছি।’