বারবার ভেজাল মসলা বানিয়ে গেছেন হাসেম মিয়া
মসলার কারখানা রয়েছে হাসেম মিয়ার। তবে তিনি শুধু মসলাই বিক্রি করেন না, এর সঙ্গে মেশান মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক রং, চালের কুড়া, পচা ডালের গুঁড়া ও কাঠের গুঁড়া। ভেজাল মসলা বানানোর অপরাধে র্যাব তাঁকে দুইবার আটকও করেছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালত অর্থদণ্ডাদেশও করেছিলেন।
তবু শোধরাননি কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজারস্থ লঞ্চ টার্মিনাল সংলগ্ন পুরাতন ক্যাম্পঘাট এলাকার মেঘনা মসলা মিলের মালিক হাসেম মিয়া। এবারও বিপুল পরিমাণ ভেজাল মসলাসহ আটক হয়েছেন তিনি। তবে এবার আর তাঁকে জরিমানা করা হয়নি। বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাঁর বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় মামলা করেছে র্যাব।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পুরাতন ক্যাম্পঘাট এলাকা থেকে আবুল হাসেম (৬০), তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলাম (২২) ও কর্মচারী সেরেনা বেগমকে (৩৫) আটক করা হয়। আবুল হাসেমের বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের পঞ্চবটী এলাকায়। সেরেনা উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের হুমায়ূন কবিরের স্ত্রী।
অভিযানের সময় মেঘনা মসলা মিলে তল্লাশি করে বিভিন্ন ধরনের ভেজাল মেশানো মরিচের গুঁড়া ৯৫৫ কেজি, হলুদের গুঁড়া ৬০০ কেজি, ধনিয়ার গুঁড়া ৭০৫ কেজি, ডাল ১০০ কেজি, নিম্নমানের শুকনা মরিচ ৩০ কেজি, হলুদ রং ও লাল রং ৩৩০ গ্রাম উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, ভৈরব ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়ের জানান, র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, ভৈরব ক্যাম্প গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, ভৈরব বাজারস্থ লঞ্চ টার্মিনাল সংলগ্ন পুরাতন ক্যাম্পঘাট এলাকার মেঘনা মসলা মিলে এক অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন ধরনের মসলা উপকরণের সঙ্গে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক রং, চালের কুড়া, পচা ডালের গুঁড়া, কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে ভেজাল মসলা তৈরি করছে। ওই সংবাদ পেয়ে ভৈরব র্যাব ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে মেঘনা মসলা মিলে অভিযান চালায়।
রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়ের জানান, ওই মিলটিতে এর আগেও দুইবার র্যাব অভিযান চালিয়ে ভেজাল মসলাসহ হাসেম মিয়াকে আটক করেছিল। প্রতিবারই মোটা অঙ্কের আর্থিক জরিমানা দিয়ে তিনি পুনরায় এই কাজ করে যাচ্ছেন। অতি মুনাফালোভী এই ব্যক্তির ভেজাল করা স্বভাবে পরিণত হয়েছে। তাই এবার জরিমানা আদায় না করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে তিনজনকে ভৈরব থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।