বাস-লঞ্চে করে শ্রমিকরা কর্মস্থলে ফিরতে পারবে

Looks like you've blocked notifications!
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মুরগি সরবরাহের গাড়িতে করেই শ্রমিকরা ঢাকায় ফিরছে। ছবিটি আজ শনিবার বগুড়ার বনানী এলাকা থেকে তোলা। ছবি : ফোকাস বাংলা

করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে চলমান লকডাউনের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে তৈরি পোশাক কারখানাসহ রপ্তানিমুখী সব শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

একদিনের ব্যবধানে আজ শনিবার সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-কর্মচারীদের গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় কর্মস্থলে ফেরার স্বার্থে এবার সাময়িক সময়ের জন্য সারা দেশে লঞ্চ ও বাস চলাচলেরও অনুমতি দিয়েছে সরকার।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম রাতে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশে নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’

পরে রাত ৯টা ১৮ মিনিটে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক বিবরণিতে গণপরিবহন চালুর বিষয়টি জানানো হয়।

তথ্য বিরবণীতে বলা হয়, ‘রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের কাজে যোগদানের সুবিধার্থে ১ আগস্ট ২০২১ বেলা ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ রাত ১০টার দিকে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রিপরিষদের একটি সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের অবহিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগামীকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশের শ্রমিকদের ঢাকায় আনার জন্য বাস চলাচল করতে পারবে।’

বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদলও নৌযান চালুর বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে রাতে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বরিশাল থেকে রাতেই লঞ্চ ছেড়ে যাবে।

নভেল করোনাভাইরাসের ঊর্ধগতি রোধে গত ২৩ জুলাই থেকে দেশব্যাপী সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন চলছে। আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত এ লকডাউন চলবে। এর মধ্যেই পোশাকশিল্পসহ সব ধরনের শিল্প কল-কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ী নেতারা। কিন্তু সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সেই দাবি অনুমোদন পায়নি।

সবশেষ গত বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ী নেতারা মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কারখানা খুলে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করেন। এরপর গতকাল বিকেলে রপ্তানিমুখী কারখানা খুলে দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করে  সরকার। যদিও এদিন দুপুরেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম জানিয়েছিলেন, তাঁরা করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে ৫ আগস্টের পর আরও অন্তত ১০ দিন কঠোর লকডাউন বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন।

এর অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই গতকাল কারাখানা খুলে দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারির পর গ্রামে থাকা শ্রমিক-কর্মচারীরা ঢাকায় ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেন। তাঁরা আজ শনিবার সকাল থেকেই যে যেভাবে পারেন ঢাকার পথে রওনা দেন। ‘চাকরি বাঁচানোর স্বার্থে’ অনেককে দীর্ঘ পথ হেঁটেই রওনা দিতে দেখা গেছে। 

আরিচা-বাংলাবাজার, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজীরহাট ফেরিঘাটে সকাল থেকে ছিল ঢাকামুখী যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। মানুষের ভিড়ের কারণে অনেক ক্ষেত্রে ফেরিতে যানবাহন উঠাতে পারেনি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। চূড়ান্ত ভোগান্তি স্বীকার করে এবং পর্যাপ্ত টাকা খরচ করে ঢাকা আসতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মানুষেরা। এই অবস্থার মধ্যেই এখন সারা দেশে নৌযান ও বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়া হলো।