বিআইডব্লিউটিসির সাবেক মহাব্যবস্থাপক শওকতকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) সাবেক মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন (অব.) শওকত সরদারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ক্যাপ্টেন শওকতের আগাম জামিন খারিজ করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শওকত সরদারের বিরুদ্ধে ফেরির ফগ লাইট কেনায় অনিয়মের অভিযোগে মামলাটি করা হয়। মামলায় আগাম জামিন পেতে আবেদন করেন তিনি। আজ আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জে কে পাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘দেশের উন্নয়নে দুর্নীতি বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, এভাবে চলতে পারে না। এ আসামিকে এখনি জেলে পাঠানো উচিৎ। কিন্তু আইনজীবীদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে পাঠালাম না।’ পরে দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দেন তিনি।
দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ গত ৫ জানুয়ারি ফেরির ফগ লাইট কেনায় অনিয়মের অভিযোগে বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপকসহ সাত কর্মকর্তার নামে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক মামলার তথ্য জানান।
এ মামলার আসামিরা হলেন বিআইডব্লিউটিসির সাবেক চেয়ারম্যান ও পরিচালক (কারিগরি) ড. জ্ঞান রঞ্জন শীল, জিএম ক্যাপ্টেন (অব.) শওকত সরদার, মো. নুরুল হুদা, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি পঙ্কজ কুমার পাল, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (কারিগরি) ইঞ্জিনিয়ার মো. রহমত উল্লা, বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) কারিগরি বিভাগের ব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন এবং মেসার্স জনি করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী ওমর আলী।
ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ১০ কিলোমিটার দেখা যায় এমন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইট কিনতে পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাঁদের নামে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর দুদক থেকে মামলা অনুমোদন দেওয়া হয়। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন অনিয়ম এবং দুর্নীতির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ও পিএসআই কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে সার্চ অ্যান্ড ফগ লাইটের পরিবর্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সার্চ লাইটসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কিনে সরকারের পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি করেছেন। অনুমোদন করা মামলায় তাদের নামে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।