বিচারক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার পরিকল্পনা, গ্রেপ্তার ১
বিচারক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গতকাল রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম মনির আব্দুল রাজ্জাক। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি পাসপোর্ট ও দেশি-বিদেশি দুটি সিম কার্ড ও ১৯ পাতার বিভিন্ন অপরাধমূলক স্ক্রিনশট জব্দ করা হয়।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘‘মনির আব্দুল রাজ্জাক ২০০৭ সালে প্রথমে একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করার জন্য বাহরাইন যায়। প্রবাসে থাকা অবস্থায় তিনি ডিজিটাল বিন্যাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় উগ্র মতবাদপুষ্ট বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিও দেখে রেডিক্যালাইজড হয়। পরে তিনি ফেইক ফেসবুক আইডি খুলে নিজের পরিচয় গোপন রেখে গাজওয়াতুল হিন্দ নামক একটি ধর্মীয় উগ্র মতবাদী সংগঠনে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিভিন্ন পোস্টে সবাইকে এই জিহাদে যোগদানের আহ্বান করতেন। সর্বশেষ তিনি বাহরাইন থেকে ২০১৮ সালে দেশে আসেন এবং ২ মাস পরে পুনরায় প্রবাসে যান। প্রবাসে বসে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় উগ্রবাদপুষ্ট উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে অনলাইনে জঙ্গীবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন এবং রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করছিলেন।’’
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘‘গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি ধর্মীয় উগ্রবাদী সংগঠন গাজওয়াতুল হিন্দে যোগদানের বিষয়ে সবার দোয়া কামনা করেন। যেন ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’এর এই যুদ্ধে আল্লাহ তাকে কবুল করেন। তিনি এই হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিচারক এবং পুলিশ বাহিনীকে টার্গেট করে ফেসবুকে বিভিন্ন উগ্রবাদী পোস্ট দিতে থাকেন। তাদের উপর হামলার পরিকল্পনা করার বিষয়টি মাথায় নিয়েই বাহরাইন থেকে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি বাংলাদেশে আসেন। এরপর ধর্মীয় উগ্র জিহাদী কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের জন্য ছদ্মবেশে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।’’
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘‘গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি প্রবাসে (বাহরাইন) থাকাকালে তার সহকর্মী পাকিস্তানি নাগরিকের পরামর্শে পাকিস্তানি সেজে ফেসবুকে ‘Golam Rabbane’ নামে একটি ফেইক ফেসবুক আইডি খোলে। যেখানে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি নিজেকে পাকিস্তান উর্দু স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনা করেছে মর্মে স্ট্যাটাস দেয়, যাতে অন্যরা তার আইডি দেখে তাকে পাকিস্তানি বলে মনে করে। এরপর সে তার ফেইক ফেসবুক আইডিতে অনবরত বাংলাদেশবিরোধী বিভিন্ন নাশকতা ও ষড়যন্ত্রমূলক পোস্ট দিত।এ ব্যাপারে রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।’’