বিচার শুরু না হওয়া ‘রহস্যজনক’, বললেন আবরারের বাবা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার বিচারকাজ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর জন্য আবেদন করেছেন নিহত আবরার ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ।
আজ সোমবার ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) কার্যালয়ে বরকত উল্লাহ এসে এ আবেদন করেন। আবেদনের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ মামলার বিচার শুরু না হওয়া রহস্যজনক মনে হচ্ছে। আজ ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অফিস থেকে আমাকে আসতে বলা হয়েছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আবেদন করার জন্য। এজন্য এসেছি এবং আবেদন করেছি।’
আবরারের বাবা আরো বলেন, ‘আসামিরা যেন আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে না যেতে পারে তাই সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’
ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবরারের বাবাকে ফোন করে এনেছি আবেদনে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য। তিনি স্বাক্ষর করেছেন। তাই আশা করছি, আগামী ধার্য তারিখের মধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি পাঠানোর প্রজ্ঞাপন হয়ে যাবে। এর পরই মামলাটির অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হবে।’
এদিকে আজ আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন আগামী ১৮ মার্চ ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ দিন ধার্য করেন।
এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন—বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার ওরফে অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা, উপসমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, গ্রন্থ ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মো. মুজাহিদুর রহমান, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, এএসএম নাজমুস সাদাত, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম, এস এম মাহমুদ সেতু, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ।
আসামিদের মধ্যে মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ পলাতক আছেন। বাকি ২২ জন কারাগারে আছেন। এই মামলায় আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ কারাগারে থাকা ২২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৩ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের একটি কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা।