বিটিআরএফে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালন

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিটিআরএফ কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার কেক কেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন পালন করা হয়। ছবি : এনটিভি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ থেরাপি এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন ফাউন্ডেশন (বিটিআরএফ) বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিটিআরএফ কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার এ আয়োজন করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরেই সমাজের অনগ্রসর ও নানা প্রতিবন্ধিতা এবং প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা বিভিন্ন শিশু ও ব্যক্তির শিক্ষা, চিকিৎসা, পুনর্বাসন সেবা নিয়ে কাজ করে আসছে বিটিআরএফ।

ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে দুই শিশু জেসিয়া ও শেহরান। অনুষ্ঠানে জেসিয়ার অমৌখিক উপায়ে যোগাযোগ ও শেহরানের মৌখিক যোগাযোগের দক্ষতা মুগ্ধ করে সবাইকে। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বাতজ্বর ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রের শিশু বিশেষজ্ঞ ও শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাশেদুল কবির রাসেল। আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক মানবজমিনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক তারিক চয়ন ও এনটিভি অনলাইনের নিউজরুম এডিটর ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ অভিনেত্রী, উপস্থাপিকা ও নৃত্যশিল্পী লারা লোটাস। লারা লোটাসকে বরণ করে নেন সংস্থার এনডিডি বিদ্যালয় ‘স্বনির্ভর’র কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। প্রথমেই কেক কেটে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন লারা লোটাস।

এরপর আহার পর্বে অভিভাবকদের রান্না করে আনা খাবার পরিবেশন করে বিশেষ শিশুরা। পরিবেশনা দেখে মনে হয়েছে দীর্ঘদিনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই দক্ষতা অর্জন করেছে এই বিশেষ শিশুরা।

অনুষ্ঠানে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফিদা আল–শামস বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস একই দিনে হওয়ায় দিবসটির গুরুত্ব বেড়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত স্নেহ করতেন ও ভালোবাসতেন।’

ফিদা আল–শামস আরও বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা শিশু ও বিশেষ শিশু সকলেরই রয়েছে সমান অধিকার। সমাজে শিশুরা তাঁদের গোত্র, প্রতিবন্ধিতা, ধর্ম কিংবা যেকোনো সীমাবদ্ধতার কারণে যেন কোনো বৈষম্যের শিকার না হয়, সে ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি আমাদের সকলেরই আরও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করা প্রয়োজন।’

সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিমিকা আরজুমান বলেন, ‘সরকার ও বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে অটিজমসহ সকল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য একটি আধুনিক সুসজ্জিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও মিউজিক ক্লাব এবং তাঁদের অভিভাবকদের জন্য পাঠাগার করার পরিকল্পনা আছে আমাদের।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. রাশেদুল কবির রাসেল বলেন ‘অটিজমসহ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা কিন্তু সমাজের বোঝা নয়। তাঁদেরও দক্ষতা রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে আরও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল হতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ, দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন থেরাপিস্টদের নিয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি। গেজেটের মাধ্যমে সরকারিভাবে নিয়োগ না হবার কারণে যোগ্য থেরাপিস্ট কারা এবং কোন থেরাপিস্ট এর কাছে যেতে হবে, সেই বিষয়ে আমাদের চিকিৎসক ও অভিভাবকদের অনেক ক্ষেত্রে বেগ পেতে হয়। এটি নিশ্চিত হলে তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার ভোগান্তি দূর হবে।’

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক তারিক চয়ন বলেন, ‘আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। আমরা যেন তাদের জন্য আরও বাসযোগ্য ও সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দিতে পারি, সেজন্য একযোগে কাজ করে যাওয়া দরকার।’

অনুষ্ঠানের লারা লোটাস ও কোরিওগ্রাফার মিজান লেমনের পরিবেশনায় নাচে বিমোহিত হয় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা। সংস্থাটির থেরাপিস্ট ও তরুণ কণ্ঠশিল্পী সুমন সরকারের তৈরি করা ছোটদের জন্য গানের পরিবেশনায় শেষ হয় অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটির মুখ্য সমন্বয়কারী ছিলেন সংস্থার অকুপেশনাল থেরাপিস্ট তাহমিনা আক্তার উর্মি।