বিদেশ থেকে এলেই লাগবে ‘করোনামুক্ত’ সনদ

Looks like you've blocked notifications!

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। বাড়ছে আক্রান্ত, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ফলে করোনার এই প্রকোপ রোধ করতে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ‘করোনা নেগেটিভ’ সনদ বাধ্যতামূলক করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

বেবিচকের সদস্য (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস) গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী মো. জিয়াউল কবীর স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আগামী শনিবার থেকে এই নির্দেশনা মেনে চলতে হবে জানিয়ে বেবিচকের ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশনার ফলে দেশি-বিদেশি কোনো এয়ারলাইনস কোভিড-১৯ ‘নেগেটিভ’ সনদ ছাড়া কোনো যাত্রীকে বাংলাদেশে আনতে পারবে না।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আসার আগে সব যাত্রীকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করতে হবে। পরীক্ষায় তাদের করোনাভাইরাস ‘নেগেটিভ’ এলে তবেই তারা বাংলাদেশে আসার অনুমতি পাবেন। বিমানবন্দরে যাত্রীদের সেই মেডিকেল সনদ দেখাতে হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিমানবন্দরে আসা যাত্রীর তাপমাত্রা পরীক্ষাসহ মেডিকেল স্ক্রিনিং করা হবে। কারো মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণ-উপসর্গ দেখা গেলে কোভিড-১৯ ‘নেগেটিভ’ সনদ থাকলেও তাকে সরাসরি নির্ধারিত হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করে চিকিৎসা দেওয়া হবে এবং আইসোলেশন সেন্টারে পাঠানো হবে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, এ ছাড়া যাদের মধ্যে উপসর্গ থাকবে না, তাদের বাড়ি ফিরে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। বাংলাদেশি শ্রমিক, যাঁদের বিএমইটি কার্ড আছে, তাঁরা যে দেশ থেকে আসবেন, সে দেশের পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা সহজলভ্য না হলে, তাঁরা অ্যান্টিজেন বা অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য পরীক্ষার সনদ নিয়ে দেশে আসতে পারবেন।

বাংলাদেশে অবস্থানরত কূটনৈতিক মিশনগুলোর কূটনীতিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রেও পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষার সনদ থাকতে হবে এবং সেই পরীক্ষা করাতে হবে যাত্রার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। এ তথ্যও  জানানো হয়েছে ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগের ওই নির্দেশনায়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিদেশি উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদেরও বাংলাদেশে আসতে হলে কোভিড-১৯ ‘নেগেটিভ’ সনদ দেখাতে হবে। বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যদি তাঁদের উপসর্গ না দেখা যায়, এবং তাঁরা যদি বাংলাদেশে ১৪ দিনের কম সময় অবস্থান করেন, তাহলে তাঁদের বাংলাদেশ ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু ভাইরাসের উপসর্গ থাকলে তাঁদেরও পরবর্তী পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন সেন্টার ও হাসপাতালে পাঠানো হবে।

বিমানবন্দরে কর্মরতদের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা ছাড়াও যাত্রী, ক্রু, উড়োজাহাজ জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়া যথাযথভাবে করতে নির্দেশ দিয়েছে বেবিচক।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, বাহরাইন, চীন, সৌদি আরব, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, ওমান, কাতার, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাজ্যে চলাচল করা ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ৫ ডিসেম্বর থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য গন্তব্যে এখন সরাসরি ফ্লাইট নেই। সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, দুবাই, আবুধাবি, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্যে ট্রানজিট হয়ে যাত্রীরা এসব গন্তেব্যে যাওয়া-আসা করেন। ফলে এ নির্দেশনা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য গন্তেব্যে চলাচল করা ফ্লাইটের ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে বলে নির্দেশনায় জানানো হয়েছে।

তবে শিডিউল বাণিজ্যিক ফ্লাইট ছাড়া রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ত্রাণ, মানবিক সাহায্য, প্রত্যাবাসন, বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত আনা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত কূটনৈতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে এ শর্ত প্রযোজ্য হবে না বলেও নির্দেশনায় জানানো হয়েছে। 

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে যাত্রীরা যে দেশে যাবেন, তাঁদের সে দেশ ও এয়ারলাইনসের নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। কোনো দেশে যাওয়ার জন্য কোভিড-১৯ ‘নেগেটিভ’ সনদ বাধ্যতামূলক হলে বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করাতে হবে।

ভ্রমণে কী কী করণীয়, কী কী সঙ্গে রাখতে হবে, তা এয়ারলাইনস যাত্রীদের জানানোর ব্যবস্থা করবে। তবে বিদেশে যেতে ১০ বছরের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে ওই সনদ বাধ্যতামূলক নয় বলেও বেবিচকের নির্দেশনায় জানানো হয়েছে।