বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় আজ রোববার থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্টদের কোনো ধরনের অবহেলা ছিল কিনা, তা উদঘাটন করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ইমাম হোসেন জানান, বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় ফতুল্লা জোনের বিদ্যুৎ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিতাসের আট কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুদিনের রিমান্ডের আজ প্রথম দিন। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অবহেলার বিষয়টি উদঘাটন করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
ইমাম হোসেন আরো জানান, মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনাটি একটি জাতীয় ইস্যু। গুরুত্বের সঙ্গে এর তদন্তকাজ চলছে। এলাকায় ঘরবাড়ি নির্মাণকারী এবং মসজিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদেরও পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হবে। যাদের অবহেলায় এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের সবাইকেই আইনের আওতায় নেওয়া হবে।
এদিকে, এ বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ফরিদ (৫০) নামের আরেকজনের গতকাল শনিবার মৃত্যু হয়েছে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৩ জনে।
গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শনিবার দুপুরের দিকে ফরিদ মারা গেছেন।
সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে মসজিদের আগুনের ঘটনায় দগ্ধ চিকিৎসাধীন ফরিদ নামের আরেকজন মারা গেছেন। তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগে শনিবার সকাল পৌনে ৮টায় আজিজ আহমেদ নামের আরেকজন মারা যান।’
গত ৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। মসজিদের ভেতরে ৫০ জনের মতো মুসল্লি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৩৭ জনকে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩৩ জন মারা গেছেন।
এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন পৃথকভাবে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। এর মধ্যে তিতাস ও জেলা প্রশাসন তাদের প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এ ঘটনায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ফতুল্লা অফিসের আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গতকাল তাঁদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। পরে ওই আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুদিনের রিমান্ড দেন আদালত। গতকাল নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলম এ আদেশ দেন।
আদালত পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আট আসামিকে হাজির করে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে সিআইডি। শুনানি শেষে বিচারক প্রত্যেককে দুদিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।’