বিনামূল্যে গরুর মাংস ও ইফতার বিতরণ
বাজারে এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৭৫০ টাকা। ঈদকে সামনে রেখে এর দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। গরুর মাংস, ব্রয়লার মুরগি, সোনালি ও লেয়ার মুরগি নিম্ন মধ্যবিত্তদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। যখন এক কেজি গরুর মাংস কিনতে হিমশিম খেতে হয় সাধারণ ক্রেতাকে তখন বিনামূল্যে এক কেজি করে গরুর মাংস ও ইফতার বিতরণ করছেন নারায়ণগঞ্জের একজন সমাজসেবক মাসুদুজ্জামান।
গত বছর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন রিকশাচালকের মাংস কিনে খেতে না পরার আক্ষেপ ও কান্নাকাটির একটি ভিডিও দেখে তার এই উদ্যোগ। আর এই উদ্যোগে বেশ খুশি অসহায় ও সাধারণ মানুষ।
শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জে সবচাইতে বড় দিগুবাবুর বাজার, কালিবাজারসহ রয়েছে বেশ কয়েকটি বাজার।
বাজার করতে এসে চাকরিজীবী সাধারণ ভোক্তা আমিষের দামের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা। এক কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস এক হাজার ৫০, ব্রয়লার মুরগি ২০০, সোনালি ৩৩০ ও লাল লেয়ার মুরগির দাম ৩৩০ টাকা।
মাংস ব্যবসায়ী হাজি মোহাম্মদ হোসেন, দিল মোহাম্মদ দিলু ও ও মুরগির ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আল-আমিন এনটিভি অনলাইনকে জানান, ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ, গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি। তাই গরুর দামও বৃদ্ধি—এমন অজুহাতে মাংসের দাম এত বেশি। এখন চাহিদা কিছুটা কম থাকায় দামও কম রয়েছে। তবে ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসবে ততই দাম বাড়তে পারে গরুর মাংস ও মুরগির দাম বলে জানান এই ব্যবসায়ীরা।
এমন সময় এক কেজি করে গরুর মাংস রিকশাচালক, অসহায় ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করছেন নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মাসুদুজ্জামান মাসুদ।
মডেল গ্রুপের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ মনির হোসেন এনটিভি অনলাইনকে জানান, গত বছর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক রিকশাচালক গরুর মাংস কিনে খেতে না পারার একটি কান্নার ভিডিও দেখেন ব্যবসায়ী, মডেল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট সমাজসেবক মাসুদুজ্জামান মাসুদ ও তার পরিবার। ভিডিওটি তাদের মনে দাগ কাটে। সেই সময় থেকে রমজান এলেই তাঁর নিজস্ব ফার্মে পালন করা গরু জবাই করে প্রথম রমজান থেকে (সপ্তাহে ছয়টি গরু জবাই করে) জনপ্রতি এক কেজি করে মাংস অসহায়, রিকশাচালক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিচ্ছেন। এ কাজে তাঁরই নিজস্ব ৩০ জনের একটি কর্মী বাহিনী নিয়োজিত। পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে ইফতার সামগ্রীও। তাঁর উদ্দেশ্য আল্লাহকে রাজি খুশি করা। এই জেলায় তাঁর এই উদ্যোগ চলবে রমজানজুড়ে। পাশাপাশি তিনি সবাইকে যার যার সমর্থ্য অনুযায়ী গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
মাংসের দাম অসহায় গরিবদের সাধ্যের বাইরে হওয়ায় এক কেজি গরুর মাংস পেয়ে অনেকটা সোনার হরিণের মতো মনে করছেন অনেকে। বিনামূল্যে মাংস পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে দোয়া করছেন এবং এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন অসহায় গরিব, রিকশাচালকরা।