বিবাহিতদের দিয়ে ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন

Looks like you've blocked notifications!

সিলেকশন প্রথা থেকে বের হয়ে ইলেকশনের মাধ্যমে ২৭ বছর পর ডেলিগেটদের সরাসরি ভোটে বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। এবং নিয়ম করা হয় বিবাহিত, অছাত্র এবং বয়স্করা ছাত্রদলের রাজনীতিতে থাকতে পারবেন না। কিন্তু নিজেদের সেই নিয়ম ভেঙ্গে বিবাহিত-বয়স্কদের দিয়েই ছাত্রদলের জেলা, মহানগর কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে সংগঠনটি।

মূলত ছাত্রলের নেতা নির্বাচনে ভোটের আগে বিএনপির হাইকমান্ড বেশ কিছু নিয়ম ঠিক করে দেয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বিবাহিত, অছাত্র এবং বয়স্করা ছাত্রদল করতে পারবেন না। জেলা, মহানগর কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও সেটা মানা হচ্ছে না। এ ছাড়া ছাত্রদলের কাউন্সিলের কোনো প্রার্থী ১০ শতাংশের কম ভোট পেলে তিনি কেন্দ্রীয় পদে আসতে পারবেন না। কিন্তু সেটিও মানা হয়নি।

ছাত্রদলের ১১৭টি সাংগঠনিক জেলা ইউনিটের মধ্যে প্রায় ৮৫টির রয়েছে আংশিক কমিটি। অন্যদিকে এসব সাংগঠনিক কমিটির বেশিরভাগেরই মেয়াদ শেষ। এসব কমিটিতে যারা নেতৃত্বে আছেন তাদের অনেকেই বিবাহিত ও বয়স্ক। এসব বিবাহিত ও বয়স্কদের রেখেই বর্তমান নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়ম ভেঙে সাংগঠনিক কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করছে।

তবে কেন্দ্রীয় কমিটির এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছে অনেক জেলা কমিটির নেতারা। এমনকি সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য কেন্দ্রের কাছে চিঠিও দিয়েছেন তারা।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আসলে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের অনেক জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি। আর এসব কমিটি হয়েছে রাজীব-আকরাম ভাইয়ের কমিটির সময়। তাই আমরা এ কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করব।’

ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, ‘দীর্ঘদিনের যারা ছাত্রদল করেছেন কিন্তু কোনো পদ-পদবী নেই, তারা যেন যুবদল বা অন্য সংগঠনে গিয়ে নিজেদের একটা পরিচয় দিতে পারেন সেই জন্যই সিনিয়র ও বিবাহিতদের দিয়ে বর্তমান কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করা হচ্ছে। ’

এসব পূর্ণাঙ্গ কমিটির মেয়াদ কত দিন হবে জানতে চাইলে ছাত্রদল সভাপতি আরো বলেন, ‘কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার ২৫ দিন থেকে এক মাসের মাঝে এসব কমিটি ভেঙে দিয়ে অবিবাহিত ও নিয়মিতদের দিয়ে নতুন কমিটি করা হবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক যুগ্ম সম্পাদক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গেল ১৮ মার্চ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের নীতিনির্ধারণী কমিটির কার্যনির্বাহীর এক সভায় বিভিন্ন ইউনিট কমিটির পদপ্রার্থিতার বিষয়ে বেশকিছু সিদ্ধান্ত হয়। যার মধ্যে জেলা ও জেলা সমমান শাখার পদপ্রত্যাশী প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে এবং বয়সসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রার্থীর এসএসসি পাসের সন কোনোভাবেই ২০০৩ সালের আগে হতে পারবে না। সাংগঠনিক উপজেলা ও উপজেলা সমমান শাখার (উপজেলা, থানা, পৌর ও কলেজ) পদপ্রত্যাশী প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে এবং বয়সসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রার্থীর এসএসসি পাসের সন কোনোভাবেই ২০০৫ সালের আগে হতে পারবে না। ছাত্রী নেত্রীদের বৈবাহিক অবস্থা শিথিলযোগ্য।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেনী জেলা ছাত্রদলের এক যুগ্ম সম্পাদক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নিয়মিত ছাত্র ও অবিবাহিতদের দিয়ে কমিটি করলে ছাত্রদলের গতি আসবে। কারণ দীর্ঘদিনের পুরোনো কমিটিগুলোতে বিবাহিত এবং বয়স্কদের দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। সেগুলো এখনো বলবৎ আছে।’

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কাউন্সিল ভোটের মাধ্যমে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন ফজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ইকবাল হোসেন।