বিয়ার দিয়ে ছাত্রলীগের নেত্রীকে ফাঁসানোর চেষ্টা, আসামি গ্রেপ্তার না করার অভিযোগ
কৌশলে বিয়ার ও সিগারেট ক্যামেরার ফ্রেমে রেখে গোপনে ছবি তুলে ছাত্রলীগ নেত্রীকে ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠেছে খিলগাঁও মডেল কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন খানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন ছাত্রলীগের ওই নেত্রী।
মামলার এক মাস পরও আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মামলার বাদী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এই সহসভাপতি।
আজ বুধবার এনটিভি অনলাইনকে ওই ছাত্রলীগের নেত্রী বলেন, গত ৭ জুলাই রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করি। মামলার নম্বর (১৫/২৯৩ তারিখ ৭-৭-২০২০)। তবে এক মাসেও গ্রেপ্তার হননি ছাত্রলীগের নেতা সুমন খান।
এ বিষয়ে খিলগাঁও খানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুকুল আলম আজ বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আসামিকে ধরার চেষ্টা চলছে। মামলার বাদী আমার কাছে কয়েকবার এসেছিলেন। তাঁকেও বলেছি আসামিকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে। অচিরেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।’
মামলার বাদী বলেন, ‘নারীরা সাধারণত রাজনীতিতে আসতে চায় না। পরিবারকে বুঝিয়ে রাজনীতিতে এসে আজ এমন একটি অপপ্রচারের শিকার হব, তা ভাবতে পারিনি। আমি একাধিকবার থানায় গিয়েছি। পুলিশ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছে কিন্তু আসামি ধরছে না। আমি পরিবার ও সামাজিকভাবে প্রতিনিয়ত অসম্মানীত হচ্ছি।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আজিজুল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আসামিকে গ্রেপ্তার করার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। তাঁকে খুঁজে পাচ্ছি না।’
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তিনি ও ছাত্রলীগনেতা সুমন খান খিলগাঁও মডেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন। তাঁরা একটি অনুষ্ঠানে গেলে ছাত্রলীগনেতা সুমন সুকৌশলে একটি আপত্তিকর ছবি তোলে। যা পরে সুমন সমাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। তখন তিনি খিলগাঁও মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। যার নম্বর ২২০৭ তারিখ ৩০-১০-১৯।
বাদী এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, জিডির পর ছাত্রলীগনেতা সুমন ও ভুক্তভোগী নেত্রীকে খিলগাঁও মডেল থানায় নেওয়া হয়। সেখানে সুমন নিজ হতে একটি আপসনামা দিয়ে মুক্তি পান। আপসনামায় সুমন স্বীকার করেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশে গোপনে বিয়ার রেখে সুকৌশলে ছাত্রলীগনেত্রীর একটি ছবি ক্যামেরায় ধারণ করি। ভবিষ্যতে এই ছবি দিয়ে ছাত্রলীগনেত্রীর বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচার করলে আমি দায়ী থাকব। এ ছাড়া ছাত্রলীগনেত্রী আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।’ কিন্তু পরে এ ছবি দিয়ে সুমন আবারও অপপ্রচার শুরু করেন।
এরপর গত ৭ জুলাই ছাত্রলীগের নেত্রী সুমনের বিরুদ্ধে খিলগাঁও মডেল থানায় মামলা করেন। মামলা দায়েরের এক মাস পরও আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে মামলার আসামি সুমন খানের সঙ্গে কথা হয় এনটিভি অনলাইনের। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এর কোনো সত্যতা এখনো কেউ পায়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমি কোনো আপসনামা দেইনি।’
তবে মামলার কাগজসহ আপসনামার একটি কপি এনটিভি অনলাইনের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। এবং আপসনামা প্রস্তুতকারী উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ জসিমও এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এ প্রসঙ্গে এসআই জসিম এনটিভি অনলাইনকে, ‘এ আপসনামা আমার সামনে সম্পাদন করা হয়েছে। বর্তমানে এ ঘটনায় মামলা চলছে।’