বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না নন্দিতার

Looks like you've blocked notifications!
সাতক্ষীরা সদর থানা ভবন। ছবি : সংগৃহীত

মাত্র কয়েক দিন পরই বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা। তার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বলি হলেন সাতক্ষীরার কলেজছাত্রী নন্দিতা চৌধুরী (২০)। সিঁথিতে সিঁদুর পরার আগেই চলে যেতে হলো দুনিয়া ছেড়ে।

সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুর গ্রামের বিকাশ চৌধুরীর মেয়ে নন্দিতা। সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক শ্রেণির ছাত্রী। গতকাল সোমবার সকালে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নন্দিতার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে গিয়েছিল। এ অবস্থায় ওই আইডি থেকে অশোভন ও কটূক্তিমূলক লেখালেখি করা হচ্ছিল। এর পাল্টা জবাবও আসছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন নন্দিতা। গতকাল রোববার দুপুরে নন্দিতা এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করেন।

এদিকে, ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে চারজন ছেলেমেয়ে তাদের বাড়িতে এসে নন্দিতাকে এ বলে শাসায় যে, ‘তুমি অপরাধ স্বীকার করো, না হলে তোমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ জবাবে নন্দিতা বলেন, ‘আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে গেছে। কে বা কারা এতে অবান্তর ভাষায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও পরিবারকে আক্রমণ করে কথা বলছে; সেটা আমার জানা নেই। আর এ কারণে আমি সাতক্ষীরা থানায় একটি জিডি করেছি। তাতে আমি বিস্তারিত উল্লেখ করে পুলিশের সহায়তা চেয়েছি।’ এর পরও নন্দিতাকে ওই চারজন কঠোর ভাষায় শাসিয়ে চলে যান। পরিবারের লোকজন এ খবর জেনে হতাশ হয়ে পড়েন।

এদিকে, আজ সোমবার সকালে নিজ ঘরে নন্দিতার লাশ ঝুলতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। পরে পুলিশকে খবর দিলে তাঁর লাশ উদ্ধার করে।

নন্দিতার বাবা বিকাশ চৌধুরী জানান, আগামী ১৪ নভেম্বর তাঁর মেয়ে নন্দিতার বিয়ে হওয়ার কথা। এরই মধ্যে সব আয়োজনও সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই অপমানিত হওয়ার অভিমানে তাঁর মেয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওসমান গনি বলেন, ‘নন্দিতা চৌধুরী গতকাল রোববার একটি জিডি করেছিলেন। এতে তিনি তাঁর আইডি হ্যাক হয়েছে উল্লেখ করে পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলেন। বিষয়টি তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জেনেছি।’