বুয়েটের আবরার হত্যা : জিয়নের জামিন নামঞ্জুর
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়নের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার জামিনের ওপর শুনানি শেষে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের ভার্চুয়াল আদালত এ আদেশ দেন।
আসামি মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়নের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ।
শুনানি শেষ আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ সাংবাদিদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর ভার্চুয়াল আদালতে জিয়নের জামিন শুনানি করি। তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন বিচারক।
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে গত বছর ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। রাতভর নির্যাতন করে তাঁকে হত্যা করা হয়। মামলার তদন্তে জানা গেছে, রাত ১০টা থেকে একটানা রাত ২টা পর্যন্ত আবরারকে শিবির সন্দেহে পেটানো হয়। ক্রিকেট স্টাম্প, স্কিপিং দড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। কিলঘুষি, লাথিও মারা হয়। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডর থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত ১৩ জানুয়ারি মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পর নথি মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ১২ জানুয়ারি মো. মোর্শেদ ওরফে মোর্শেদ অমত্য ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার তদন্ত চলাকালে ২১ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই কারাগারে আছেন। তারা হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু।
গত বছর ১৩ নভেম্বর আবরার হত্যা মামলায় ২৫ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেওয়া হয়। চার্জশিটভুক্ত সব আসামি বুয়েটের ছাত্র ও ছাত্রলীগের রাজনীরি সঙ্গে জড়িত।
এ মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আট আসামি। তারা হলেন ইফতি মোশাররফ হোসেন সকাল, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার, মো. মুজাহিদুর রহমান, মনিরুজ্জামান মনির, এ এস এম নাজমুস শাদাত ও তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর।
মামলার ৭ নম্বর আসামি হলেন মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (২২)। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক। তিনি নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। থাকতেন শেরেবাংলা হলে। তিনি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ীর মো. শহিদুল ইসলাম ও শাহনাজ বেগমের ছেলে। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।