বেতনের টাকায় থানার পতিত জমিতে বাগান করলেন ওসি

Looks like you've blocked notifications!
নিজের বেতনের টাকা খরচ করে সুন্দর এই বাগান করেছেন সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. শহিদুর রহমান। প্রতিদিন পেশাগত দায়িত্ব শেষ করে নিজের হাতে বাগানের পরিচর্যা করেন তিনি। ছবি : এনটিভি

সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার সামনে ১৭ শতক পতিত জমি। থানা প্রতিষ্ঠার পর থেকে ময়লা-আর্বজনায় অপরিষ্কার থাকত এই জমি। কিন্তু এখন সেই চিত্র পাল্টে গেছে। পতিত জমিতে এখন নানা রঙের ফুলের সমারোহ, ফুলের মৌ মৌ গন্ধ। রয়েছে শীতকালীন নানা সবজির গাছ।

নিজের বেতনের টাকা খরচ করে সুন্দর এই বাগান করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুর রহমান। প্রতিদিন পেশাগত দায়িত্ব শেষ করে নিজের হাতে বাগানের পরিচর্যা করেন তিনি।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওসি শহিদুর রহমান সুনামগঞ্জ সদর থানায় যোগদানের পর থেকে পতিত জমিটুকুর চেহারা পাল্টে দিয়েছেন। প্রতিদিন পেশাগত দায়িত্ব পালনের ফাঁকে ফাঁকে বাগানে সময় দেন এবং নিজে বাগান পরিচর্যা করেন।

আজ শনিবার থানার ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে শীতকালীন নানান ধরনের ফুল, ফল ও সবজির সমারোহ। গাছে গাছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের মৌ মৌ গন্ধ। সবজি গাছে সবজি আসতে শুরু করায় পাল্টে গেছে থানার চারপাশের এলাকাটুকু। পতিত থাকা জায়গার একপাশে টমেটো চাষ, শিম, মূলা, মিষ্টি লাউ, পানি লাউ, লেটুস পাতা, ভেন্ডি, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, বেগুন, শশাসহ অনেক রকমের সবজি চাষ করেছেন শহিদুর রহমান। আর অন্য পাশে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ লাগিয়েছেন যা পুরো থানাকে রঙিন করে তুলেছে।

থানায় অভিযোগ করতে আসা সালেহ বলেন, ‘আগে থানার পতিত জায়গায় আর্বজনার ভাগাড় ছিল। বর্তমানে সেই জায়গায় ফুল ও সবজি বাগান করে জায়গাটির রূপ বদলে দিয়েছেন ওসি। আমারও বাসার পেছনে অনেক জায়গা পতিত আছে। আমি সেখানে একটি ফুলের বাগান করব।’

থানার মসজিদে নামাজ পড়তে আসা রাগিব আহমেদ বলেন, ‘থানার ভেতরে ঢুকলে ফুলের মৌ মৌ গন্ধ উপভোগ করি। আগে ওই পতিত জায়গায় থাকা আর্বজনার দুর্গন্ধে পরিবেশের ক্ষতি হতো। এখন ওই জায়গায় ফুল, ফল ও সবজি বাগান হওয়ায় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে বলে মনে করি।’

বাগান করার কারণে জানতে চাইলে সদর থানার মো. শহিদুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাড়ির পাশে কিংবা বাড়ির আঙিনায় এক ইঞ্চি জায়গাও যেন খালি কিংবা পতিত না থাকে। প্রধানমন্ত্রীর এমন আহ্বানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এই সদর মডেল থানায় যোগদানের পর নিজ উদ্যোগে ১৭ শতক পতিত জায়গাকে পতিত না রেখে বাগান করার চেষ্টা করি।’

ওসি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনাকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে থানায় যোগদানের পর বেতনের প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করে এই ১৭ শতক পতিত জায়গায় শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের ফুল, ফল ও সবজি চাষ করা শুরু করি। আমি মনে করি এই ফুল, ফল ও সবজি চাষের কারণে এখানকার পরিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষার পাশাপাশি এই ফরমালিনমুক্ত সবজিগুলো নিজে ও থানার সব অফিসার ও সদস্যরা খেতে পারবেন।’