ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন বুধবারের মধ্যে
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে চলমান লকডাউনের মধ্যেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল নামে। এই ঘটনায় জেলার সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মাসুদ রানা ও সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহদাৎ হোসেন টিটুকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই তদন্ত কমিটিকে আগামী ২২ এপ্রিলের মধ্যে জানাজায় লোকসমাগমের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছে পুলিশ সদর দপ্তর। আজ রোববার সকালে পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. সোহেল রানা এ কথা জানান।
সোহেল রানা বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানাধীন বেড়তলাস্থ জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গতকাল ১৮ এপ্রিল সকাল ১০টায় মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রিন্সিপাল মাওলানা আল্লামা জুবায়ের আনসারীর জানাজায় লোক সমাগমের ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (প্রশাসন ও অর্থ) সভাপতি ইকবাল হোসেনকে প্রধান সভাপতি করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন)। কমিটিকে আগামী ২২ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
এ ছাড়া এ ঘটনায় সরাইল, আশুগঞ্জ ও সদর উপজেলার আটটি গ্রাম লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ওই সব গ্রামের লোকজন ১৪ দিন ঘর থেকে বের হতে পারবে না।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার গুরুত্ব উপেক্ষা করে এই জানাজায় বিশাল জমায়েতের বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় সরাইলের জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসায় এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে মহামারি করোনাভাইরাস থেকে পরিত্রাণের পাশাপাশি মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। মাদ্রাসার প্রান্তর ছাড়িয়ে জানাজার সারি দীর্ঘ হয় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিস্তীর্ণ এলাকা পর্যন্ত। জানাজায় ইমামতি করেন জুবায়ের আহমদ আনসারীর ছেলে হাফেজ মাওলানা আসাদ উল্লাহ।
শুক্রবার বিকেল পৌনে ৬টায় জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন প্রখ্যাত আলেম জুবায়ের আহমদ আনসারী। জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামে তাঁর বাড়ি।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা থেকে গোটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। জেলায় এ পর্যন্ত দুজন এ ভাইরাসে মারা গেছে। রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৬ জন।