ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লকডাউনের মধ্যে জানাজা, ৩ উপজেলার ৮ গ্রাম লকডাউন

Looks like you've blocked notifications!

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে চলমান লকডাউনের মধ্যেই পূর্বঘোষণা ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বেড়তলা গ্রামে মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজার ঘটনায় জেলার তিন উপজেলার আটটি গ্রাম লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গ্রামগুলোতে মাইকিং করে এসব গ্রামের বাসিন্দাদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিন পালনের নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়।

গ্রামগুলো হলো আশুগঞ্জ উপজেলার খড়িয়ালা, বৈগইর, মৈশাইর, সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শান্তিনগর, সীতাহরণ, বড়ইবাড়ি ও বেড়তলা এবং সদর উপজেলার মালিহাতা গ্রাম। এসব গ্রামের কেউ আগামী ১৪ দিন বাড়ি থেকে বের হলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মাসুদ রানা জানান, প্রশাসনের নির্দেশে গ্রামের বাসিন্দাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নে আটটি গ্রাম লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।  হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক পুলিশের টহল থাকবে।  এসব গ্রামের কাউকে বের হতে দেওয়া হবে না।  দোকানপাট বন্ধ থাকবে।  যেকোনো প্রয়োজনে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় সরাইলের জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসায় এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে মহামারি করোনাভাইরাস থেকে পরিত্রাণের পাশাপাশি মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। মাদ্রাসার প্রান্তর ছাড়িয়ে জানাজার সারি দীর্ঘ হয় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিস্তীর্ণ এলাকা পর্যন্ত।  এতে দেশের বিভিন্ন স্থান এবং জেলার শীর্ষ আলেমরা ছাড়াও মাদ্রাসা ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ যোগ দেন।  ইমামতি করেন জুবায়ের আহমদ আনসারীর ছেলে হাফেজ মাওলানা আসাদ উল্লাহ। 

এদিকে, দেশে করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব মানার কথা থাকলেও বড় ধরনের জমায়েত হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে। গত শুক্রবার বিকেল পৌনে ৬টায় জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন প্রখ্যাত আলেম জুবায়ের আহমদ আনসারী। জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামে তাঁর বাড়ি।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা থেকে গোটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।  জেলায় এ পর্যন্ত দুজন এ ভাইরাসে মারা গেছেন।  রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৬ জন।