ভাবির সঙ্গে পরকীয়া করতে বড় ভাইকে হত্যা
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের আনিকেলীবড় এলাকায় মেরাজ মিয়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ভাবির সঙ্গে দেবরের পরকীয়ার কারণেই বড় ভাই মেরাজকে হত্যা করে ছোট ভাই বদরুল মিয়া। তাঁকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে হত্যার মূল রহস্য।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার আনিকেলীবড় গ্রামের মেরাজ মিয়া নিজ ঘরে ইফতার শেষে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। পরের দিন শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে এলাকাবাসী খালের মধ্যে মেরাজের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়। নিহত ব্যক্তির শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান জানান, প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশ নিহত মেরাজের ছোট ভাই বদরুল মিয়া ও এলাকার কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। হত্যার সঙ্গে জড়িত ছোট ভাই বদরুলকে সন্দেহ হয়। নানা কৌশলে তাঁকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে পুলিশ। বদরুল কিছু স্বীকার না করে ‘কীভাবে কী হয়েছে তা আল্লাহ ভালো জানেন’ বলে এড়িয়ে যান। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
বদরুল জানান, ভাবির সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের পরকীয়া ছিল। তাঁরা কোরআন সাক্ষী রেখে নিজেরা গোপনে বিয়ে করেন প্রায় দুই বছর আগে। কয়েক দিন আগে পরকীয়ার বিষয়টি বড় ভাই জানতে পারলে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়। হত্যাকাণ্ডের তিন দিন আগে নিহত বড় ভাইয়ের স্ত্রী এক ছেলে (৫) ও এক মেয়েকে (৮) নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। এতে বদরুল মনে মনে ক্ষুব্ধ হন এবং বড় ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পুলিশ আরো জানায়, গত বৃহস্পতিবার ইফতারের পর মেরাজ মিয়া বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশের বাজারে গেলে ঘটনাস্থলের পাশেই অবস্থান নেন বদরুল। রাত ১০টার দিকে যখন বড় ভাই মেরাজ বাজার থেকে ফিরছিলেন তখন লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন বড়ভাই মেরাজ। এরপর একাধারে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে বাড়িতে চলে যান। যেহেতু সবাই আলাদা এবং ঘরে স্ত্রী নেই তাই রাতে কেউ আর মেরাজের খোঁজ নেয়নি।