ভারতের সঙ্গে দর কষাকষির ক্ষমতা সরকারের নেই : মির্জা ফখরুল

Looks like you've blocked notifications!
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী মতিঝিলে একটি হোটেলে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত ‘ফেনী নদীর পানি চুক্তি : বাংলাদেশের সম্ভাব্য বিপর্যয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : এনটিভি

বর্তমান সরকারকে ‘পুতুল সরকার’ আখ্যায়িত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সরকার জোর করে ক্ষমতায় আছে বলেই তারা দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না।’

‘ভারতের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই’- এমনটা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা ভারতের বিরুদ্ধে তো কখনোই কথা বলি না। সমস্যা হচ্ছে যে, আজকে এমন একটা সরকার যে আমার সমস্যাগুলো নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলতে পারে না। সেই শক্তি তার নেই। দর কষাকষির কোনো ক্ষমতা তার নেই। সে তাদের উপর নির্ভর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য।

‘এটা হচ্ছে মূল কথা। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। আজকে এই বিষয়গুলো যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি, এই সরকার যত দিন থাকবে তত দিনই বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে। একে একে নষ্ট হবে এবং বাংলাদেশ নিঃস্ব হয়ে যাবে’, যোগ করেন বিএনপিনেতা। 

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী মতিঝিলের একটি হোটেলে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত ‘ফেনী নদীর পানি চুক্তি : বাংলাদেশের সম্ভাব্য বিপর্যয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

ফেনী নদীর পানি চুক্তির বিষয়ে সংসদে কোনো আলোচনা হয়নি উল্লেখ্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এটা এমন একটা সংসদ যেখানে এই চুক্তিগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আমাদের সংবিধানে বলা আছে, যেকোনো চুক্তি নিয়ে সংসদে আলোচনা হতে হবে। অথচ তারা এ বিষয়ে কোনো আলোচনাই করেনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটি অভিন্ন নদী নয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, খাবার পানি চাইলে কি পানি দেব না? ভারো কথা পানি দেবেন। কিন্তু আমাদের যে লাখ লাখ মানুষ তিস্তার অববাহিকায় নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। তাদের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, জীবন-জীবিকা নষ্ট হচ্ছে। সে বিষয় নিয়ে আপনারা কথা বলবেন না? ১২ বছরেও তিস্তার এক ফোটা পানি আনতে পারলেন না।’
আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের মানুষের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে সর্বোপরি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে তারা একটি পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এই সরকার আসার পর গত ১২ বছর থেকে শুনছি তিস্তা চুক্তি এই হয়ে যাচ্ছে, এই হয়ে যাবে। আমাদের সাথে (ভারতের) সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে। অথচ তিস্তা থেকে আমরা এক ফোঁটা পানিও পাইনি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নতুন নির্বাচন করতে হবে। যার মাধ্যমে জনগণের সরকার হবে। গণতান্ত্রিক সরকার হবে।’

খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তাঁকে আটক করে রাখার কোনো বৈধতা নেই। আইনগতভাবে তিনি আটক থাকতে পারেন না। একটা মিথ্যা মামলার ওপরে সাজা দিয়ে তাঁকে আটক করে রাখা হয়েছে। তাঁকে আটক রাখা হয়েছে এজন্য যে, তিনি হলেন স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক। যখন টিপাইমুখ বাঁধ করার জন্য তোড়জোড় চলছিল তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন। তিনি প্রেস কনফারেন্স করেছেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন। গণতন্ত্রের জন্য তিনি সারা জীবন লড়াই করেছেন। সেজন্যই আজকে তাঁকে আটক করে রাখা হয়েছে।’

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন। অ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশের) মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, ডিউইউজের (একাংশের) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।