ভারতে তিন বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা, দুজনের পরিচয় মিলেছে

Looks like you've blocked notifications!
ভারতে গরু চুরির অভিযোগে হত্যার শিকার ব্যক্তিদের বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি। ছবি : এনটিভি

তিন বাংলাদেশিকে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দির ভুবরিঘাট চা বাগান এলাকায় গরু চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার করা হয়েছে।

গত শনিবার মধ্যরাতে সীমান্তবর্তী ভারতের ভুবরিঘাট চা বাগান এলাকায় গণপিটুনিতে ওই তিন বাংলাদেশি নিহত হন। এদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে।

নিহতরা হলেন বড়লেখা উপজেলার কালিমপুর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে জুয়েল আহমদ ও আকদ্দর মিয়ার ছেলে ননু মিয়া। তারা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা।

বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গাজী শহীদুল্লাহ আজ সোমবার রাতে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ভারতে নিহত দুই বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া গেছে। আরো একজনের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। লাশ দেশে আনার জন্য বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে ভারতের করিমগঞ্জ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক জানান, তিন বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় নজরে আসে বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীদের। নিহত তিনজনের ছবি সীমান্তবর্তী এলাকার গ্রামগুলোতে পাঠানো হলে দুজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা এবং পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন।

এ ছাড়া গত ১ জুন ভারতের পাথারকান্দি থানার বৈঠাখাল বাগানে গরু চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে এক বাংলাদেশি গরু চোরের মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, ভারতের পাথারকান্দি ভুবরিঘাট চা বাগানে গত শনিবার রাতে গরু চোর সন্দেহে বাগান শ্রমিকরা তিনজনকে আটক করে। এ সময় আরো কয়েকজন পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিএসএফ ১৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়কসহ করিমগঞ্জ সীমান্ত শাখার অতিরিক্ত পুলিশ অধিক্ষক প্রশান্ত দত্ত। প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মৃত তিনজনের পকেটে থাকা বিড়ি, দেয়াশলাই, বিস্কুট, মশার কয়েল, ফেন্সিং কাটার যন্ত্রসহ কিছু নথিপত্র দেখে নিহতদের বাংলাদেশি নাগরিক বলে তারা নিশ্চিত হন।

নিহত জুয়েল আহমদের ভাই সোয়েল আহমদ জানান, তার ভাই ও চাচা সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান। গত কয়েক দিন দরে তাঁরা বাড়ি ফিরছেন না। ভারতে তিন বাংলাদেশি মারা যাওয়ার খবর শুনে জুড়ী থানায় যোগাযোগ করেন। তিনজনের লাশের ছবির মধ্যে চাচাকে শনাক্ত করেন তিনি। বাকিগুলো অস্পষ্ট হওয়ায় ওসি সাহেব অন্য এঙ্গেলের ছবি জোগাড় করে দেখালে ভাইকেও শনাক্ত করেন। তাঁরা কবে কীভাবে ভারতে গেছেন বলতে পারছেন না সোয়েল আহমদ।

জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, গত রোববার বিজিবি থেকে ছবি পেয়ে জামকান্দি এলাকায় তন্নতন্ন করে তিনজনের পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা করে পাইনি। কোনো মানুষ মিসিং রয়েছে বলেও কেউ বলেনি। পরে বড়লেখা থানার ওসির কাছেও ছবি পাঠিয়ে দেই।