ভারত তিস্তা ব্যারেজের সব গেট খুলে দিয়েছে, বাংলাদেশে ‘রেড অ্যালার্ট’
তিস্তা ব্যারেজের গজলডোবা অংশে প্রতিবেশী ভারত বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হয়েছে লালমনিরহাট, নীলফামারির বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নিচু এলাকা। কুড়িগ্রামেও তিস্তার পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।
বছরের এই সময়ে হঠাৎ করে এমন পানি বৃদ্ধি বা বন্যার আশঙ্কা অস্বাভাবিক ঘটনা। অথচ, লালমনিরহাটের তিন উপজেলার অনেক গ্রাম, বিশেষ করে তিস্তার চরএলাকা এখন প্লাবিত। রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, উঠতি আমন ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসল পানির নিচে।
আজ বুধবার সকালে লালমনিরহাটের এক বৃদ্ধ (৬০) বলছিলেন, ‘হঠাৎ করেই এখানে পানি বেড়েছে। খেতখামার ও রাস্তা তলিয়ে গেছে। আমরা খুব বিপদে পড়েছি। দিন দিন পানি বাড়তেছে। অনেক পানি আসছে।’
একই এলাকার এক নারী (৫০) বলছিলেন, ‘অনেক পানি এসে বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। সব নিয়ে এখন রাস্তার উপর এসে আশ্রয় নিয়েছে।’
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার পর থেকে নদীর পানি বাড়তে থাকে। আজ বুধবার সকাল ৬টার সময় প্রথম বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে সকাল ৯টায় নদীর পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ভারতীয় অংশে কয়েকদিন প্রবল বৃষ্টিপাতে পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠে যাওয়ায়, আজ ভারত গজলডোবা বাঁধের ৪৪টি গেট খুলে দেয়। যার বাংলাদেশে প্রভাবে তিস্তায় পানি বাড়ছে হু হু করে। এদিকে পানির তোড়ে ভেঙে গেছে ব্যারেজের ফ্ল্যাট বাইপাস। ব্যারেজ এলাকায় মাইকিং করে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ বলেন, ‘সকালবেলায় আমি খবর পাই, ফ্ল্যাট বাইপাসের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তখন আমি মাইকিং করার জন্য বলে দিই। যাতে লোকজন নিরাপদে দূরে সরে যায়। এবং রেড অ্যালার্ট জারি করতে বলি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীলফামারীর ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউ-দৌলা বিবিসিকে বলেন, তিস্তার পানি এখন ৭০ সেন্টিমিটারের বেশি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে।
পানি বৃদ্ধিতে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার ডাউয়াবাড়ি, সিন্দুর্ণা ও গড্ডিমারীসহ জেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের তিস্তাতীরে নিচু এলাকা প্লাবিত।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, নীলফামারী, কুড়িগ্রামেও। দেখা দিয়েছে নদী ভাঙনও।