ভৈরবের ফারহানা ও মাছুম কিশোরগঞ্জের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা ফারহানা বেগম ও শিক্ষক মো. মাছুম মিয়া। ছবি : সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌরশহরের কমলপুর মোজাফ্ফর বেপারী সরকারি আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফারহানা বেগম ও পলতাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মাছুম মিয়া ভৈরব উপজেলার পর এবার কিশোরগঞ্জ জেলারও শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন।

২০১৯ সালের জেলাপর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক যাচাই-বাছাই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফারহানা বেগমকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা ও মো. মাছুম মিয়াকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ঘোষণা করা হয়। কিশোরগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাঁদের কাছে এ-সংক্রান্ত সরকারি চিঠি সোমবার বিকেলে এসে পৌঁছায় বলে তাঁরা নিশ্চিত করেছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসের ওই চিঠির বরাতে তাঁরা জানান, পাঠদানে দক্ষতা, বিদ্যালয়ের সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগ সফলতা অর্জন, সহপাঠ কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ, ঝরে পড়া শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করানো, শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শিশু শিক্ষার্থীদের উপযোগী ও আনন্দময় করে তোলাসহ ২৭টি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য ফারহানা বেগম ও মাছুম মিয়াকে জেলাপর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচন করা হয়।

ফারহানা বেগম ২০০০ সালের জুন মাসের ১ তারিখে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। এরই মধ্যে তিনি উপজেলার সাদেকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মানিকদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গোছামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করেছেন।

এর আগে ফারহানা বেগম ২০১৪ সালেও উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। এ ছাড়া তিনি শিক্ষা ও চাকরিক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য ২০১৬ সালে উপজেলা পর্যায়ে জয়িতা নির্বাচিত হন। তিনি শিক্ষাজীবনে কবিতা আবৃত্তি, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি প্রতিযোগিতায় স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে একাধিকবার পুরস্কৃত হয়েছেন।

ফারহানা বেগম উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের গোছামারা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত ভূমি কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হাবিবুর রহমানের বড় মেয়ে এবং স্থানীয় দৈনিক পূর্বকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক-প্রকাশক সৈয়দ সোহেল সাশ্রুর স্ত্রী। দুই ছেলে ও এক কন্যাসন্তানের মা তিনি।

মো. মাছুম মিয়া ২০১০ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের তেয়ারীরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০১৫ সালে ভৈরব পৌর এলাকার পলতাকান্দা সৃজনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন তিনি। এ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তিনি হোম ভিজিট, উঠান বৈঠক ও মা সমাবেশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করেন। সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও প্রস্থান, সঠিক সময়ে শ্রেণিতে গমন ও শিখন শেখানোর কৌশল প্রয়োগ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠদান, সুদক্ষ বাচনভঙ্গি এবং উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে ক্লাসকে শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলেন তিনি।

এভাবেই বিদ্যালয়ের সার্বিক ফলাফলে সফলতায় ভূমিকা রাখছেন মাছুম মিয়া। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রদানের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করিয়ে সফলতা, বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সহযোগিতামূলক কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে মাছুম মিয়া ভূমিকা রেখে চলেছেন।

শিক্ষকতার বাইরে মাছুম মিয়া একজন দক্ষ সংগঠক। তিনি শিক্ষকদের পেশাজীবী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। মাছুম মিয়ার ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল একজন শিক্ষক হবেন। তিনি ভৈরব উপজেলা তেয়ারীরচর গ্রামের বেপারী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মো. রইছ উদ্দীন বেপারী। তাঁর প্রিয় শখ কবিতা লেখা ও বই পড়া।