ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহে ২ মাসে তিনটি লাইনচ্যুতি, জনমনে আতঙ্ক

Looks like you've blocked notifications!
ভৈরব বাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে ঝুঁকিপূর্ণ রেলপথে যাত্রা করে একটি ট্রেন। রেলপথটিতে নেই পাথর, গজিয়েছে ঘাস। দুই লেনের মাঝখানে গর্ত। ছবি : এনটিভি

ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রেলপথে চরম অবহেলা আর অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী ও যাত্রীরা। এ কারণে দুই মাসের ব্যবধানে তিনটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি তাঁদের। এতে করে জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে—না জানি তাঁদের বড় রকমের দুর্ঘটনা দেখতে হয়। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, লাইনের ত্রুটি-বিচ্যুতির অনেকটাই মেরামত করা হয়েছে। বাকিগুলোরও কাজ চলছে।

গত ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে ভৈরবগামী একটি লোকাল ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এরপর একই মাসের ১২ তারিখ আবারও ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনায় চার ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। সর্বশেষ ২১ নভেম্বর ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রামগামী নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়ে সাড়ে চার ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।

এই তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনাই ঘটে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রেলপথের ভৈরব বাজার রেলওয়ে জংশন স্টেশনের আউটার সিগন্যালের কাছে। তিন ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও যাত্রীদের মধ্যে চরম ভীতি ও আতঙ্ক বিরাজ করে। দুর্ভোগ পোহাতে হয় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনসহ বিভিন্ন স্টেশনে আটকেপড়া অন্যান্য ট্রেনের যাত্রীদের।

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপিজেলার ছয়সূতি এলাকার রেলপথে নেই পাথর, ভেঙে আছে নাটবল্টু (বায়ে) ভৈরবের কালিকাপ্রসাদ এলাকার রেলস্টেশন এলাকায় রেলপথে নাট-বল্টু না থাকায় স্লিপারটির সঙ্গে রেলপথের সংযোগ নেই। ছবি : এনটিভি

এই পথে চলাচলকারী যাত্রী এবং স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, দীর্ঘ এই রেলপথটিতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা আর অব্যবস্থাপনা রয়েছে। ফলে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনটি চলতে থাকলে ভবিষ্যতে হয়তো আরো বড় রকমের দুর্ঘটনা দেখার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তাই জনগণের জানমাল ও সরকারি সম্পদের বড় ক্ষয়ক্ষতির আগে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যেন সুনজর দেয় এই রেলপথটির সংস্কারে।

এই পথের নিয়মিত যাত্রী রফিকুল, তমাল ও শরীফ মিয়া এবং স্থানীয় বাসিন্দা সবুজ সারোয়ার, মজিবুর রহমান ও আব্দুর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, এই রেলপথটির অনেক জায়গায় রেললাইনের পাথর নেই। স্লিপার পচে গেছে। নাট-বল্টুসহ ক্লিপ নেই। ফলে ট্রেন যখন চলাচল করে, তখন অতিরিক্ত কাঁপে। এতে করে তাঁরা আতঙ্কিত থাকেন, না জানি ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়ে। তাঁরা তাই অবিলম্বে এইসবের সমাধান চান।

কেবল রেললাইনের ত্রুটি নয়, সিগন্যালেও সমস্যা আছে বলে জানালেন এই পথে চলাচলকারী আন্তনগর এগারোসিন্দুর ট্রেনের লোকোমাস্টার আবদুর রহমান। তিনি জানান, এই পথের অনেক সিগন্যালের বাতি নেই। ফলে কাছে না এলে সিগন্যাল বোঝা যায় না। এতে তাঁদের অনেক সময় সমস্যা হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ভৈরব বাজার ঘাটের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী জীষান দত্ত জানান, লাইনে কিছু ত্রুটি ছিল, যার অধিকাংশই সমাধান হয়ে গেছে। বাকিগুলোরও কাজ চলছে। দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।