ভোটের মাঠে সেনাবাহিনী চায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম

Looks like you've blocked notifications!
নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ। ছবি : সংগৃহীত

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে সেনাবাহিনী চায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। নির্বাচনে সেনাবাহিনকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার দাবিও তুলেছে দলটি। একইসঙ্গে প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধাদেরকে ভোট প্রদান প্রক্রিয়ার আওতায় আনার কথাও বলেছে।

আজ মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে বসে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এমন দাবি জানায়। দলের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল এসময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন।

মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আমরা অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী। তবে, এর জন্য সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা দূর করে যথোপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।’

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘যেহেতু জনগণের ভোটাধিকার সংরক্ষণ করা মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চেতনা, সেহেতু একটি কল্যাণকর আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণে এই ভোটাধিকারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি এবং সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ছাড়া যেহেতু দুর্নীতির মূলোৎপাটন সম্ভব নয়, তাই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন অবাধ, অর্থবহ, নিরপেক্ষ ও ত্রুটিমুক্ত নির্বাচনের আয়োজন করতে সাংবিধানিকভাবেই দায়বদ্ধ।’

মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী লিখিত বক্তব্যে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেন। এসবের মধ্যে রয়েছে—

১. নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে।

২. সকল দলের সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নিশ্চিত করতে হবে।

৩. নির্বাচনকে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করতে এবং সংঘাত-সহিংসতা এড়াতে প্রতীক বরাদ্দ থেকে নির্বাচন পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত প্রার্থী সমর্থক ও ভোটারদের নিরাপত্তা বিধানে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

৪. বাংলাদেশের নারী-পুরুষ ভোটার জনতার অধিকাংশই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোট প্রদানে অভ্যস্ত নয় বিধায় ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালটেই ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

৫. প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সকল প্রার্থীর এজেন্টগণের উপস্থিতিতে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণার আইন শতভাগ কার্যকর করতে হবে।

৬. নির্বাচনকালীন সময়ে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকতে হবে।

৭. স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়াকে নিরুৎসাহিত না করে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমা দেওয়ার আইন বাতিল করতে হবে।

৮. কেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদান এবং ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে আসতে বাঁধা প্রদানের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও তার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

৯. জনমনে বিতর্ক ও প্রশ্ন সৃষ্টি হয় এমন বক্তব্য প্রদানের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

১০. ত্রুটিমুক্ত ব্যবস্থা প্রবর্তন করে প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধাদেরকে ভোট প্রদান প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে।

১১. বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। সঙ্গত কারণে এ দেশে ইসলামী রাজনীতির চর্চা থাকাটা খুব স্বাভাবিক। সুতরাং, ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাহীন ও জনসমর্থনহীন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।