ভ্যানের দোকান উপহার পেলেন ২ ভিক্ষুক

Looks like you've blocked notifications!
নওগাঁয় ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের আওতায় দুই ভিক্ষুককে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের দোকান উপহার দেওয়া হয়েছে। ছবি : এনটিভি

নওগাঁয় ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের আওতায় দুই ভিক্ষুককে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের দোকান উপহার দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিকেলে নওগাঁ সরকারি শিশু পরিবারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে ভ্যানের দোকান হস্তান্তর করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ ইব্রাহীম।

এ সময় জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক নুর মোহাম্মদ, সহকারী পরিচালক মোহতাছিম বিল্লাহ, সরকারি শিশু পরিবারের উপতত্ত্বাবধায়ক সাইদুর রহমান ও শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক ব্রুহানী সুলতান গামা, নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর (প্যানেল মেয়র) সারোয়ার তানজিদ সম্রাট, ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আহসান হাবিব রাজন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শহর সমাজসেবা কার্যালয়ের আওতায় এই ভ্যানের দোকান বিতরণ করা হয়। সুবিধাভোগী নওগাঁ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বরুনকান্দি মহল্লার বৃদ্ধ কাজেম উদ্দিন মণ্ডল এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পার-নওগাঁ শান্তিনগর মহল্লার বৃদ্ধ ফজলু হোসেন দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গতকাল শহর সমাজসেবা কার্যালয়ের আওতায় তাঁদের কর্মসংস্থানের জন্য ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের দোকান হস্তান্তর করা হয়।

সবুজ রঙের ভ্যানে লাল টিনের ছাউনি। মনে হবে যেন এক লাল-সবুজের বাংলাদেশ। আর ছাউনির ওপর সোলার প্যানেল। এটি একটি ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের দোকান। এ দোকানটি বিভিন্ন বিস্কুট, চিপস, চকলেট ও চায়ের জন্য গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডারসহ প্রায় শতাধিক উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়। দিনশেষে ভ্যানের বক্সের ভেতর মালামালগুলো যত্নসহকারে রেখে তালাবদ্ধ করে রাখার ব্যবস্থাও রয়েছে। দুটি ভ্যানের এ দোকানের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। দুটি ভ্যান ও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রি দিয়ে সাজানোতে খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা।

ভ্যানের এ দোকানটি হস্তান্তরের সময় এ দুই পরিবারকে নগদ দুই হাজার করে টাকাও দেওয়া হয়। দোকান নিয়মিত তদারকি করা হবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।

ফজলু হকের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। তাদের বিয়ে হওয়ায় আলাদা সংসার হয়েছে। তারাও গরিব হওয়ায় আমাদের সহযোগিতা করতে পারে না। স্বামী যুবক বয়সে কাজকর্ম করে সংসার চালাতেন। বয়স হওয়ায় এখন পরিশ্রম করতে না পেরে প্রায় ২০ বছর ধরে ভিক্ষা করছিলেন। প্রতিবেশীর কাছে হাত পাততে হতো। বিভিন্ন কথা শুনতে হতো। সরকার থেকে দোকান পেয়ে সুবিধা হয়েছে। এখন থেকে আর ভিক্ষা করতে হবে না। বেচাকেনা ভালো হলে আয় থেকে সংসার চলবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর জন্য অনেক দোয়া করেন তাঁরা।

নওগাঁ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছে দেশে কোনো ভিক্ষাবৃত্তি থাকবে না। তারই ধারাবাহিকতায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় আমরা দুজন ভিক্ষুককে কর্মসংস্থানের জন্য ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের দোকান দিলাম। যেখানে ভ্যানের ওপর সোলার প্যানেল, চায়ের জন্য গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডার, বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট ও চিপসসহ প্রায় শতাধিক উপকরণ দিয়ে দোকান সাজানো। যা থেকে তাঁদের জীবন-জীবিকা চলবে। আশা করছি তারা ভিক্ষাবৃত্তি থেকে দূরে থাকবেন এবং সরকারের যে উদ্দেশ্য তা সফল ও বাস্তবায়ন হবে।’