মমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরও ২১ জনের মৃত্যু

Looks like you've blocked notifications!

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় এবং উপসর্গ নিয়ে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মমেক হাসপাতাল থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ময়মনসিংহ জেলা এবং জেলার বাইরের মৃত ২১ জনের মধ্যে ছয় জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে এবং ১৫ জন করোনার উপসর্গে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ জেলায় ৩১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছেন।

মমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় নির্ধারিত বেডের দ্বিগুণ সংখ্যক রোগী এখন ভর্তি রয়েছে। চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মমেক হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিটের কনসালটেন্ট এবং করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. মো. মহিউদ্দিন খান জানান, করোনা ইউনিটে মোট ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়ে মারা গেছেন ময়মনসিংহ সদরের রহিমা (৬৫), তারাকান্দার ইলিয়াস আলি (৭০), ত্রিশালের মো. আব্দুল কুদ্দুস (৭০), জামালপুর সদরের আসমা (৭০), কিশোরগঞ্জের হাজী মহিউদ্দীন (৬৮) এবং টাংগাইল সদরের আব্দুর সাত্তার (৪০)।

এ ছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ময়মনসিংহ সদরের নজরুল (৭০), সকুরজান (৬০), ফজিলা খাতুন (৬০), আনোয়ারা বেগম (৬৫), বাজেদ আলি (৭৫) এবং রহিমা, ৪০, নান্দাইলের আমেনা (৬০), ঈশ্বরগঞ্জের রোকন উদ্দিন (৬০), গফরগাঁওয়ের রেহেনা খাতুন (৭৫), ভালুকার জালাল (৬০), গৌরীপুরের আরিফ (১৬), জামালপুর সদরের হযরত আলি (৭০), দেওয়ানগঞ্জের হেলেনা (৫০), নেত্রকোনার কেন্দুয়ার নয়ন মিঞা (৪০), এবং টাংগাইল সদরের মোসলেম উদ্দীন (৭০)।

ডা. মো. মহিউদ্দিন খান আরও জানান, হাসপাতালে করোনা ইউনিটে মোট রোগী ভর্তি আছেন ৫৮০ জন, এবং আইসিইউতে ভর্তি আছেন ২২ জন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১৭০টি সাধারণ বেড, ৪০টি কেবিন, ২০টি আইসিইউ ও ১০টি এইচডিইউসহ মোট ২৪০টি বেডের অনুমোদন থাকলেও ওয়ার্ডটিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৫৮০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। 

এদিকে, চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল পর্যাপ্ত না থাকায় অতিরিক্ত রোগীরা সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।  ঈদের পর থেকে এ হাসপাতালে সাধারণ শয্যা ও আইসিইউ সংকট দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিনে তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। অনেক রোগীকে হাসপাতালের ফ্লোরে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। গুরুতর রোগীদের আইসিইউ’র জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হচ্ছে।  কোনো রোগী সুস্থ হলে কিংবা মারা গেলেই কেবল পাওয়া যাচ্ছে বেড।  নতুন করে অনেক রোগী ভর্তি হতে এলেও বেড খালি না থাকায় অনেকে রোগী ভর্তি হতে পারছে না। চাহিদা সামাল দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউ’র পাঁচটি শয্যা বাড়ালেও এই শয্যাগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিইউ নয়।  

গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ করোনা টেস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ১৯৫ জন এবং আরটিপিসিআর টেস্টে ১২১ জনসহ মোট ৩১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২১ শতাংশ। যাদের মধ্যে ময়মনসিংহ সদরে ১৬১ জন, নান্দাইলে ১৩ জন, ঈশ্বরগঞ্জে সাত জন, গৌরীপুরে ১৭ জন, ফুলপুরে দুজন, তারাকান্দায় চার জন, হালুয়াঘাটে ১১ জন, মুক্তাগাছায় ২৪ জন, ফুলবাড়িয়ায় ১৭ জন, ত্রিশালে ২৭ জন, ভালুকায় ১৯ জন এবং গফরগাঁওয়ে ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এ পর্যন্ত ময়মনসিংহ জেলায় মোট ১৬ হাজার ৬৯১ জনের করোনা শনাক্তের পর সুস্থ হয়েছে ১২ হাজার ৩৩০ জন। বাকি চার হাজার ৩৬১ জন রোগী এখনও জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে। ময়মনসিংহ জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছে ১৮১ জন।