মহসিন খানের আত্মহত্যার ভিডিও অপসারণ অব্যাহত রাখার নির্দেশ
মডেল মুশফিকা তিনার বাবা ও চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খানের ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আদালত মহসনি খানের আত্মহত্যার ভিডিওর লিংক কোথাও পেলে, তা আবেদনকারী আইনজীবীকে আদালত বা বিটিআরসির আইনজীবীকে দিতে বলেছেন। একই সঙ্গে আবেদনকারী আইনজীবী কোনো লিংক সরবরাহ করলে তা সঙ্গে সঙ্গে অপসারণ করতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। সেই সঙ্গে আগামী ১ মার্চ এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের দিন নির্ধারণ করেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রেজা ই রাকিব। আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এম ফয়েজ।
এর আগে আদালতে দাখিল করা বিটিআরসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুক থেকে ১৯০টি, ইউটিউব থেকে ছয়টি, লাইকি থেকে তিনটি ও টিকটক থেকে তিনটি লিংক অপসারণ করা হয়েছে।
গত বুধবার মাথায় নিজের বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন আবু মহসিন খান। ধানমণ্ডির ৭ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাটে তিনি আত্মহত্যা করেন। ওই ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা ওই ব্যবসায়ী সম্পর্কে বাড়ির অন্যান্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ও দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
ভবনের কেয়ারটেকার মো. গোলাম রাব্বী সে সময় বলেন, ‘মহসিন খান ওই বাসায় একা থাকতেন। তার বাসায় কোনো কাজের বুয়া বা ড্রাইভার ছিল না। একাই রান্নাবান্না করতেন, একাই থাকতেন। আবার অনেকসময় বাইরে থেকে খাবার আনাতেন। তার একটা প্রাইভেটকার আছে। সেটা তিনি নিজেই ড্রাইভ করতেন।’
রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, নিহতের স্ত্রী-সন্তান অস্ট্রেলিয়া থাকেন। আমরা জানতে পেরেছি, ধানমণ্ডির বাসায় তিনি একা থাকতেন। ব্যবসা-বাণিজ্যেও লোকসান করেছেন। ২০১৭ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত বলে জেনেছি। এসব কারণে হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পরে গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ এক আদেশে মহসিন খানের আত্মহত্যার ফেসবুক ভিডিও এবং ওই ঘটনার স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অবিলম্বে অপসারণ করতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। আদেশ পাওয়ার ছয় ঘণ্টার মধ্যে ওই ভিডিও এবং স্থিরচিত্র সরাতে বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে মহসিন খানের ওই লাইভ ভিডিও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ অন্য সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি অতি জরুরি হিসেবে বিবেচনা করতে বলা হয়।
নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে পদক্ষেপ জানিয়ে পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলেন আদালত। আজ বুধবার এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।