মহিউদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক সচিব, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট মহিউদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ইউরোপের পাকিস্তান দূতাবাসগুলোতে কর্মরত বাঙালি কূটনীতিকদের মধ্যে মহিউদ্দিন আহমদ প্রথম পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেন। ১৯৭১ সালে তিনি লন্ডনের পাকিস্তান হাইকমিশনের দ্বিতীয় সচিবের পদ ছেড়ে দিয়ে যুক্তরাজ্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সার্বক্ষণিক কাজ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান জাতি সবসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’
শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত মহিউদ্দিন আহমদ গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার উত্তরার বাসায় মৃত্যুবরণ করেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী বিলকিসি মহিউদ্দিন।
অশীতিপর এই অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা এবং ডায়াবেটিস জটিলতায় ভুগছিলেন। তিন সপ্তাহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পর চার দিন আগে মহিউদ্দিন আহমদকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতে লন্ডনে তৎকালীন পাকিস্তান হাইকমিশনে কর্মরত ছিলেন মহিউদ্দিন। ১ আগস্ট ট্রাফলগার স্কয়ারে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এক সমাবেশে তিনি পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করার ঘোষণা দেন। ইউরোপের দেশগুলোতে কর্মরত বাঙালি কূটনীতিকদের মধ্যে তিনিই প্রথম পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনের কাজে যোগ দেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লন্ডন হয়েই দেশে ফিরেছিলেন। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি তাঁকে স্বাগত জানাতে মহিউদ্দিন আহমদও হিথ্রোতে উপস্থিত ছিলেন।
২০০১ সালের জানুয়ারিতে সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত মহিউদ্দিন আহমদ নিয়মিত মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, দারিদ্র্য, উন্নয়নসহ নানা বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজিতে নিয়মিত কলাম লিখেছেন।