দেশে বিভিন্ন জেলায় সূর্যমুখীর চাষ শুরু হয়েছে। ভোজ্যতেলের দাম বেশি হওয়ায় এর চাষ বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে বাম্পার ফলনের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হাজির মোড় (বিজিবি ক্যাম্পের পাশে), শিবগঞ্জ, রুহিয়া থানার ঢোলারহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে।

রুহিয়া থানার ঢোলারহাট মুখাবন্দি গ্রামের কৃষক ছবি লাল (৫০) এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। তার খেতে ফুল ধরতে দেখা গেছে। গত বছর ওই জমিতে সূর্যমুখী চাষ শুরু করেছিলেন তিনি। জমিটি প্রকৃতিপ্রেমীদের উপভোগের বিষয় হয়ে উঠেছে। দলে দলে তারা এখানে আসছেন এবং ছবি তুলে পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর পাঁচ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আবাদ হয়েছে কম। এ পর্যন্ত প্রায় এক দশমিক ২৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ মেট্রিক টন। তবে, প্রতি হেক্টরে দুই দশমিক ৫০ মেট্রিক টনের মতো উৎপাদন হতে পারে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শতভাগ জমিতেই ভালো বীজ পাওয়ার আশা করছে বিভাগটি।

কৃষক ছবি লাল বলেন, ‘জেনেছি, সূর্যমুখীর বীজ পশুখাদ্য হিসেবে হাঁস, মুরগিকে খাওয়ানো হয়। এই বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি জেনেছি—ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে সূর্যমুখীর তেল ব্যবহৃত হয়, যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম থাকে। এ ছাড়া এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে। ভিটামিন ‘ই’ এর ক্যান্সাররোধী গুণাবলীর কথাও জানা গেছে। এ কারণে সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধ হই।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় তেল জাতীয় ফসলের প্রযুক্তি বিস্তার ও দানা জাতীয় ফসলের প্রযুক্তি বিস্তার প্রদর্শনীর আওতায় সূর্যমুখীর চাষ করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জেলার বিভিন্ন উপজেলার চাষীদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারকি ও পরামর্শ দিয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ফসল কাটা ও মাড়াই শুরু হবে এবং বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে সূর্যমূখীর বাম্পার ফলন হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।