মাদানীকে এবার রিমান্ডে নিল তেজগাঁও থানা পুলিশ

Looks like you've blocked notifications!
আলোচিত ইসলামি বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানী। ফাইল ছবি

মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ রোববার দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাঁকে ঢাকার তেজগাঁও থানায় নেওয়া হয়।

এর আগে গাজীপুর মহানগর পুলিশের গাছা ও বাসন থানার অপর দুইটি মামলায় মাদানীকে দুই দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেলার মো. আবু সায়েম জানান, ঢাকার তেজগাঁও থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করে পুলিশ। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ মামলায় মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার দুপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে কড়া প্রহরায় তাঁকে ঢাকার তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

তেজগাঁও থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহ উদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম মাদানীকে তেজগাঁও থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৩ (৪) ২১ নম্বর মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে কারাগার থেকে তেজগাঁও থানায় আনা হয়েছে। আজ থেকে তাঁর রিমান্ড শুরু হবে। আগামী ৩০ এপ্রিল আমরা তাঁকে পুনরায় কারাগারে পাঠিয়ে দেব।’

ওসি বলেন, ‘মামলাটি হওয়ার পরপরই মাদানীর রিমান্ড আবেদন করি আমরা। সে সময় আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। কিন্তু তিনি বিভিন্ন সময় রিমান্ডে থাকায় আনা সম্ভব হয়নি।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন আদালতের সহকারী পুলিশ কমিশনার শুভাশীষ ধর জানান, রাষ্ট্র তথা সরকারবিরোধী ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি উসকানি ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে (২৬) গত ৭ এপ্রিল ভোররাতে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার লেটিরকান্দা এলাকার বাড়ি থেকে আটক করে র‌্যাব-১-এর সদস্যরা। তিনি ওই এলাকার মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে। ওই দিন রাতেই গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানায় তাঁকে হস্তান্তর করা হয়। ৮ এপ্রিল তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন র‌্যাব-১-এর উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) ও নায়েব সুবেদার মো. আব্দুল খালেক। এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। আটককালে মাদানীর কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ ‘অ্যাডাল্ট কনটেন্ট’ অশ্লীল ভিডিও চিত্রসহ পর্নোগ্রাফি পাওয়া যায়। এসব অ্যাডাল্ট ছবি ও ভিডিও তিনি নিয়মিত দেখতেন এবং সেগুলো স্টোর করতেন ও লিংক দিতেন। এজন্য রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রুজুকৃত মামলায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(৫)(ক) ধারা সংযোজন করা হয়।

গাছা থানার এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে গত ১৩ এপ্রিল আদালতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানির ধার্য তারিখ ১৫ এপ্রিল ভার্চুয়ালি শুনানি গ্রহণ করেন আদালতের বিচারক গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নাজমুন নাহার। শুনানি শেষে তিনি রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে দুই দিনের রিমান্ডে থানায় নেয় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ২০ এপ্রিল তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।

এদিকে, গত ১১ এপ্রিল জিএমপির বাসন থানায় রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপর একটি মামলা করা হয়। বাসন থানার এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৮ এপ্রিল সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাখাওয়াত হোসেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক রিমান্ড শুনানির ধার্য তারিখ ২১ এপ্রিল ভার্চুয়ালি শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক। এর পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২২ এপ্রিল দুপুরে তাঁকে কারাগার থেকে বাসন থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ২৪ এপ্রিল তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।