মাদারীপুরে নারী পাচারের অভিযোগে ভারতীয় দম্পতি গ্রেপ্তার
মাদারীপুরের শিবচরে মানবপাচারের অভিযোগে মানিক চৌধুরী ওরফে মানিক বিশ্বাস (৩২) নামে এক ভারতীয় নাগরিক এবং তার স্ত্রী শুভতারাকে গ্রেপ্তার করছে শিবচর থানা পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে শিবচর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বড় কেশবপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছে থেকে ঢাকার সাভার এলাকার সোমা আক্তার ওরফে সোনিয়া নামে এক গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. মিরাজ হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃত মানিক চৌধুরী ওরফে মানিক বিশ্বাস গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাচুরিয়া গ্রামের মৃত রবিউল চৌধুরী ছেলে বলে স্থানীয়দের কাছে পরিচয় দেন। তবে পুলিশের কাছে তিনি ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বনগাঁর উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হরিদাসপুর নয়া গোপালগঞ্জের বরেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের ছেলে হিসেবেও পরিচয় দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন আগে ঢাকার সাভার এলাকায় এক বান্ধবীর বাড়ি বেড়াতে যান মানিক চৌধুরী ও তার স্ত্রী শুভতারা। সেখানে গিয়ে পরিচয় হয় সজল ইসলামের স্ত্রী সোমা আক্তার সোনিয়ার সঙ্গে। সেই সূত্রধরে সোনিয়াকে ঢাকার উত্তরায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তিন দিন আগে ঢাকা শহরে আসার কথা বলে কৌশলে শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ে আসেন। সেখানে তিন দিন ধরে তাকে একটি ঘরে আটকে রাখেন। পরে কৌশলে এ ঘটনা তার স্বামীকে জানান তিনি। পরে তার স্বামী তাকে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে বিস্তারিত জানাতে বলেন। তখন তিনি ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনা জানান। পরে খবর পেয়ে শিবচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলামের নেতৃত্ব পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে তাদের গ্রেপ্তার এবং সোনিয়াকে করে।
উদ্ধার হওয়া সোমা আক্তার সোনিয়া বলেন, ‘আমার এক বান্ধবীর বাড়িতে বেড়াতে এলে তাদের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তারা সে সময় আমাকে ঢাকার উত্তরাতে চাকরি পাইয়ে দেবে বলে আমাকে বললে আমি রাজি হই। পরে তিন দিন আগে তারা আমাকে ঢাকায় আসতে বলে। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে আলাপ করে ঢাকায় আসি। সেখান থেকে তারা আমাকে কৌশলে শিবচর নিয়ে আসে। এখানে একটি ঘরে আমাকে তিন দিন ধরে আটকে রেখেছে। এ ছাড়া আমার একটি বড় ফোন তারা কেড়ে নেয়। তবে আমার কাছে ছোট একটি ফোন ছিল। সেই ফোন দিয়ে আমি আমার স্বামীকে ঘটনা জানাই। এরপর আমার স্বামী ৯৯৯-এ ফোন দিতে বললে আমি সেখানে ফোন দিয়ে ঘটনা জানাই।’
শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন বলেন, ‘গতকাল রাতে আমাদের পুলিশের জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে পাচারের অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করি। এ সময় সাভার এলাকার এক গৃহবধূকে উদ্ধার করি। এ বিষয়ে শিবচর থানায় একটি মানবপাচার আইনে একটি মামলা হয়েছে।’