মানিকগঞ্জে পাবজি খেলা নিয়ে কিশোর হত্যা
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় পাবজি খেলা নিয়ে এক কিশোরকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ শনিবার বিকেলে অভিযুক্ত কিশোরের বাড়ি ঘেরাও করে নিহতের স্বজনরা।
এ দিকে বাড়ি থেকে ওই কিশোরকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় বাধা দেয় পুলিশ। এতে গ্রামবাসীর ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয় তিন পুলিশ সদস্য। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত কিশোর ও তার দুই স্বজনকে আটক করেছে।
নিহত কিশোরের নাম মো. রাজু (১৪)। সে উপজেলার দক্ষিণ সাহরাইল গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। রাজু স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। এ ছাড়া আটক আলিফ কোরাইশি (১৫) একই গ্রামের রাজু কোরাইশির ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মুঠোফোনে পাবজি খেলা নিয়ে রাজু ও আলিফের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে গত গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজুকে সাইকেলে করে গ্রামের পাশে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের রুপারচর এলাকার কালীগঙ্গা নদীর তীরে কাশবনে নিয়ে যায় আলিফ। সেখানে রাজুকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আলিফ। এতে রাজু মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে আলিফ দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। এ দিকে বিভিন্ন স্থানে রাজুকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে স্বজনরা আলিফের বাড়িতে যান। ওই দিন রাত ৯টার দিকে রাজুকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। ঘটনাস্থল থেকে রাজুকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় সাহরাইল ইব্রাহিম মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজুকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে রাজু মারা যায়।
এ দিকে রাজুর মৃত্যুর খবরে তার স্বজন ও গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে আজ শনিবার বিকেলের দিকে আলিফের বাড়ি ঘেরাও করে নিহতের স্বজন ও গ্রামবাসীরা।
সিঙ্গাইর থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্লাসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে থাকার সময়ে নিহত রাজুর স্বজনেরা আলিফকে বাড়ি থেকে তুলে আনতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় উত্তেজিত গ্রামবাসীর ছোড়া ইটপাটকেলে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে ওসি সফিকুল ইসলাম মোল্লার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এক কিশোরকে হত্যার অভিযোগে আরেক কিশোরকে বাড়ি থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এতে পুলিশ বাঁধা দিলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কিশোর ও তার দুই স্বজনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’