মানুষের মুখ বন্ধ করতে ডিজিটাল আইনে মামলার হিড়িক : রিজভী

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর নয়াপল্টনে আজ সোমবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দিচ্ছেন রিজভী। ছবি : এনটিভি

মানুষের মুখ বন্ধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার হিড়িক চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের প্রবল স্রোতে মানুষ যখন ভীত ও উদ্বিগ্ন, তারপরও মানুষের মুখ বন্ধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার হিড়িক চলছে। বর্তমান নিপীড়নমূলক এ মামলা দেশের ইতিহাসের সব রেকর্ড ভঙ্গ করছে।’

কোভিড-১৯ নিয়ে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করায় গত তিন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, স্কুলের শিক্ষার্থী, নারীসহ প্রায় ২০০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ভালুকার একজন দশম শ্রেণির কিশোর শিক্ষার্থীও রয়েছে। আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘মানিকগঞ্জের বিএনপি নেতার কন্যা মাহমুদা পলিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আজ কয়েক মাস ধরে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। এই করোনার দুর্যোগকালে জালিম শাহির হিংস্র আঁচড়ে ক্রমাগত জর্জর দেশবাসী।’

রিজভী আরো বলেন, ‘দমননীতির উত্থান প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে। সর্বত্রই দারিদ্র্য, দুর্দশা, ক্ষুধা, বিনা চিকিৎসা ও অসাম্যের করুণ কাহিনি। দেশবাসীর কোনো স্বাধীনতা নেই, তাদের নাগরিক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে রাষ্ট্রশক্তি অপব্যবহারের মাধ্যমে। মেঘনার মাঝি যেমন ঝড়-বাদলের নিত্যসহচর, ঠিক তেমনি জনগণের নিত্যসহচর হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমান সরকার রচিত কালো আইনগুলো।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ‘কোটি কোটি মানুষ বেকার। সুদে টাকা নিয়ে বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ আর সরকারের মুখে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। যাদের জন্ম ঢাকায়, তারাও এখন গ্রামে পাড়ি দিচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষের উপার্জন বন্ধ থাকায় বৌ-বাচ্চাদের গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছে। ক্ষমতাসীন মন্ত্রীরা বলছেন, বাংলাদেশ এখন সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গেছে, এ উন্নয়ন গেল কোথায়? এ চালের মৌসুমেও মোটা চালের কেজি ৪০-৪৫ টাকা এবং শাকসবজির দাম হচ্ছে সম্পূর্ণভাবে স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। মানুষ অভুক্ত ও বিনা চিকিৎসায় ভুগছে। মানুষের ঘরে এখন খাদ্য নেই, চিকিৎসার সামর্থ্য নেই। ফলে ঋণ করে সুদে টাকা নিয়ে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। ইতোমধ্যে ৩০-৪০ শতাংশ মানুষ ঢাকা ছেড়ে দিয়েছে, এর ফলে বিপাকে পড়েছে বাড়িওয়ালারাও। রাষ্ট্রের মালিকানা এখন আর জনগণের কাছে নেই। তা পুলিশের কাছে চলে গেছে বলেই বর্তমান ভয়াল দুর্যোগে সরকার বর্বর অহমিকায় ভুগছে। আর জনগণ বিপত্তির শিকার হচ্ছে। মানুষ কষ্ট-ক্লান্তির অনুভূতি নিয়ে দিন কাটাচ্ছে।’