ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণ

মামুন, ভিপি নূরসহ ৬ জনের মামলার প্রতিবেদন ১২ নভেম্বর

Looks like you've blocked notifications!
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের অব্যাহতি পাওয়া আহ্বায়ক হাসান আল মামুন (বাঁয়ে) ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নূরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১২ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস আগামী ১২ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন। আজ মঙ্গলবার এই মামলার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল।

আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) স্বপন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন না আসায় বিচারক নতুন দিন ধার্য করেছেন।

গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রী ভিপি নুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় মামলাটি করেন। মামলার আসামিরা হলেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের অব্যাহতি পাওয়া আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ (২৮), ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর (২৫), ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম (২৮), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সহসভাপতি নাজমুল হুদা (২৫) এবং আব্দুল্লাহিল বাকি (২৩)।

এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ‘আসামি হাসান আল মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সপ্তম ব্যাচের ছাত্র। তিনি আমার ডিপার্টমেন্টের বড় ভাই এবং বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সুবাধে আমার সঙ্গে পরিচয় হয়। ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই আসামি আমার বিভাগের সিনিয়র হওয়ায় তার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়। সম্পর্কের একপর্যায়ে আসামির সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এর ধারাবাহিকতায় আসামির সঙ্গে আমার বিভিন্ন সময়ে ম্যাসেঞ্জার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কথোপকথন হয়। সেখানে আসামি আমাকে শারীরিক সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় আসামি গত ৩ জানুয়ারি অনুমান দুপুর ২টায় তার বাসা নবাবগঞ্জ বড় মসজিদ এলাকায় যেতে বলে এবং আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার বাসায় ধর্ষণ করে।’

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ‘ঘটনার পর গত ৪ জানুয়ারি আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। ১২ জানুয়ারি আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় মামুনের বন্ধু সোহাগের মাধ্যমে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় আমি ক্যাম্পাস রিপোর্টারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে মামুন ও সোহাগ তা করতে দেয়নি। এর আগে মামুনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে রাজি হয়, কিন্তু আমি অসুস্থ হওয়ার পর সে নানা টালবাহানা শুরু করে।

এরপর উপায়ান্তর না দেখে গত ২০ জুন বিষয়টি ভিপি নুরকে মৌখিকভাবে জানাই। সে বলে, মামুন আমার পরিষদের, আমার সহযোদ্ধা। তার সঙ্গে বসে একটা সুব্যবস্থা করে দেব। এরপর ২৪ জুন মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে তিনি আমার সঙ্গে নীলক্ষেতে দেখা করতে আসেন। কিন্তু মীমাংসার বিষয়টি এড়িয়ে আমাকে এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন। আমি যদি বাড়াবাড়ি করি তাহলে তার ভক্তদের দিয়ে ফেসবুকে আমার নামে উল্টাপাল্টা পোস্ট করাবে এবং আমাকে পতিতা বলে প্রচার করবে বলে হুমকি দেয়। তাদের ছাত্র অধিকার পরিষদের ১.১ মিলিয়ন সদস্যের গ্রুপে এ প্রচারণার হুমকি দেওয়া হয়। নুর আরো জানায়, তার একটি লাইভে আমার সব সম্মান চলে যাবে। ইতোমধ্যে মামলার চার নম্বর আসামি সাইফুল ইসলাম আমার নামে কুৎসা রটিয়েছে এবং ৫ ও ৬ নম্বর আসামিকে লাগিয়ে দেয় কুৎসা রটাতে। তারা ম্যাসেঞ্জার চ্যাট গ্রুপে আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করাসহ সম্মিলিতভাবে চক্রান্ত করে।’

এজাহারে বাদী আরো বলেন, ‘ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা পর্যায়ের কয়েকজন বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করতে চাইলেও আসামিরা তাদের ষড়যন্ত্রকারী বলে অ্যাখ্যা দেয়। এরপর আমি শারীরিক-মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় এবং আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে মামলা করায়; মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে।’