মাহফুজুর রহমানের কুলখানি, এফডিসিতে মানুষের ঢল
দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া বরেণ্য চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খানের কুলখানি অনুষ্ঠিত হয়েছে এফডিসি প্রাঙ্গণে। আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) তাঁর কুলখানিতে অংশ নেন হাজারো শিল্পী ও কলাকুশলী।
সকাল থেকেই শুরু হয় কোরআন খতম, বাদ জোহর পড়ানো হয় মিলাদ ও দোয়া। এর পর সবার মধ্যে তবারক বিতরণ করা হয়। এ আয়োজন করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রগ্রাহক সংস্থা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, বদিউল আলম খোকন, বর্ষীয়ান অভিনেতা আলমগীর, মিশা সওদাগর, জায়েদ খান, নায়করাজ রাজ্জাকের দুই পুত্র বাপ্পারাজ-সম্রাটসহ হাজারো শিল্পী-কলাকুশলী।
অনুষ্ঠান শেষে চিত্রনায়ক আলমগীর স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘মাহফুজ ছিল আমার বাল্যবন্ধু। অষ্টম শ্রেণি থেকে আমরা একসঙ্গে পড়াশোনা করেছি। চলচ্চিত্রেও আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। আমার প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্রের ক্যামেরাম্যান ছিল মাহফুজ, আমার প্রযোজিত প্রথম ছবির ক্যামেরাম্যানও সে; এমনকি আমার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্রেও মাহফুজ কাজ করেছে। আমরা শুধু বাল্যবন্ধুই ছিলাম না, আমরা ছিলাম আজীবনের বন্ধু। সবাই দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন আমার বন্ধুকে ভালো রাখেন।’
গত ৫ ডিসেম্বর রাত ১২টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ৭০ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান। ৩০ নভেম্বর দুপুর সোয়া ১টার দিকে মাহফুজুর রহমান খানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর আগে ২৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা মাহফুজুর রহমান খানকে রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালে ভর্তি করান। ফুসফুসে রক্তক্ষরণের কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।
মাহফুজুর রহমান খানের জন্ম ১৯৪৯ সালের ১৯ মে, পুরান ঢাকার হেকিম হাবিবুর রহমান রোডের এক বনেদি পরিবারে। তিনি পেশাদার চিত্রগ্রাহক হিসেবে ১৯৭২ সালে প্রথম চলচ্চিত্রে কাজ করেন। এরপর তিনি আলমগীর কবির, আলমগীর কুমকুম, হুমায়ূন আহমেদ, শিবলী সাদিকদের মতো চলচ্চিত্র পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেন। চিত্রগ্রহণের জন্য তিনি দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আটবার বাচসাস পুরস্কার এবং একবার বিশেষ বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছেন। কিংবদন্তি চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খানের মরদেহ আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।