মিথ্যা অভিযোগে বাবা-ছেলেকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনায় আটক ৫

Looks like you've blocked notifications!
মিথ্যা অভিযোগে বাবা-ছেলেকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনায় আটক চার যুবক। ছবি : এনটিভি

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুকে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ এনে এক কিশোর (১৫) ও তার বাবাকে নির্যাতনের ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরালের পর পুলিশ তাদের আটক করে। গত ১৭ মার্চ (শুক্রবার) একটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। 

এ নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত মো. কুতুবউদ্দিন (২৫) নামে এক যুবককে গত ১৯ মার্চ রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর আরও চারজনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে আরও দুজন আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।

এ বিষয়ে আজ সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাজাহান সাংবাদিকদের জানান, ওই বাবা ও তার ছেলেকে বোনের সাথে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়। এরপর সেই অপবাদ দিয়ে বাবা ও ছেলেকে একটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। যা পরে ভাইরাল হয়ে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, কিশোর ও তার বাবাকে আটক রেখে নির্যাতনের অভিযোগে ২০ মার্চ মধুখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রধান অভিযুক্ত কুতুবউদ্দিন নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় আরও চারজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনার সাথে আরও যারা জড়িত তাদের সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরের পরিবার উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মাঝকান্দি এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকে। তাদের গ্রামের বাড়ি মাগুরায়। ওই কিশোর ও তার বাবা পৃথক দুটি জুট মিলে শ্রমিকের কাজ করেন। কিশোরের মা প্রবাসে রয়েছেন। যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠা শিশুটি তার সৎ বোন।

স্থানীয়রা জানায়, ওই কিশোরের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া সৎ বোনকে যৌন নির্যাতন করে আসছে বাবা-ছেলে মিলে, এমন মিথ্যা অভিযোগের সূত্র ধরেই তাদের স্থানীয় একটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে আটকে কয়েকজন যুবক ও তরুণী মিলে মারধর করে। পরে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। নির্যাতনকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি তোলা হয়।

মূলত ওই স্কুলের শিক্ষিকা ইসরাত জাহান লিপি শিশুটিকে অত্যধিক স্নেহ করেন। তার হেফাজতে রেখে লালন-পালনের জন্য শিশুটির বাবার কাছে প্রস্তাব দেন। বাবা প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি কৌশলে এমন কাণ্ড ঘটান বলে ধারণা করা হচ্ছে।