মিরপুরে বৃদ্ধের মৃত্যু, করোনা সন্দেহ পরিবারের
রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগে ৭৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। গতকাল রোববার বিকেলে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। একাধিক সূত্রের দাবি, ওই বৃদ্ধ ব্যক্তি গত শুক্রবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া অধ্যক্ষের সংস্পর্শে ছিলেন।
আজ সোমবার দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে অধ্যক্ষের সংস্পর্শে গিয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহমুদা আফরোজ লাকী। তিনি বলেন, ‘গতকাল মারা যাওয়া বৃদ্ধ গত শুক্রবার দিবাগত রাতে মিরপুরের ডেল্টা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া অধ্যক্ষের সংস্পর্শে ছিলেন বলে পরিবারের কাছ থেকে শুনেছি। অধ্যক্ষের বাড়ির পাশের ভবনে থাকতেন ৭৩ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি।’
এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা আজ সোমবার দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। তবে আইইডিসিআর যা বলবেন তাই সত্য।’
আইইডিসিআরের প্রধান সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, ‘একজন মারা গেছেন, এটা ঠিক। কীভাবে মারা গেছেন, তা প্রেসব্রিফিং করে জানানো হবে।’
এর আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মিরপুরের ডেল্টা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার সাবেক অধ্যক্ষ। শনিবার সকালে তাঁকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। তবে মৃত অধ্যক্ষের ছেলে অভিযোগ তোলেন, আইইডিসিআরের অবহেলার কারণে তাঁর বাবা মারা গেছেন।
অভিযোগ করে অধ্যক্ষের ছেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘গত ১৬ মার্চ আমি আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করি। সেখানে থাকা একজন চিকিৎসক জানতে চাইলেন, কী কী লক্ষণ-উপসর্গ আছে। আমি বললাম, শ্বাসকষ্ট আর জ্বর। তখন ওই চিকিৎসক আমার কাছে জানতে চাইলেন, কোনো বিদেশি আমাদের বাড়িতে এসেছে কি না, বা কোনো বিদেশির সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিল কি না। আমি না বলার পর ওই চিকিৎসক বললেন, তাহলে উনার করোনা হয়নি। যেহেতু বিদেশি কন্টাক্ট নেই, সেহেতু এই ভাইরাস হওয়ার কথা না। এরপর আমরা ১৭ মার্চ ডেল্টা মেডিকেলে বাবাকে ভর্তি করি। ডেল্টা হাসপাতাল থেকেও আমাদের পরীক্ষার জন্য বলা হয়। তারপর হাসপাতালকে আমরা ঘটনা খুলে বলি।’
মৃত অধ্যক্ষের ছেলে আরো বলেন, ‘ঘটনা শোনার পর ওই হাসপাতাল আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমরাও অনেককে দিয়ে যোগাযোগ করিয়েছিলাম। যোগাযোগ করানোর পর তারা (আইইডিসিআর) পরীক্ষা করতে রাজি হয়। গত বৃহস্পতিবার আইইডিসিআর থেকে লোকজন ডেল্টা হাসপাতালে এসে আমার বাবার নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। পরের দিন শুক্রবার আমাদের জানানো হয়, কোভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে। তারপর ডেল্টা হাসপাতাল থেকে আমাদের চলে যেতে বলা হয়। আমরাও চলে আসি। সর্বশেষ শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে আমার বাবা মারা যান। অথচ প্রথম দিনেই যদি আমরা পরীক্ষা করার সুযোগ পেতাম, তাহলে আমার বাবা হয়তো মারা যেতেন না।’