মিয়ানমার অন্যায় করেছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এজন্য বন্ধুত্বসুলভ একটা মনোভাব নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তবে, তারা অন্যায় করেছেন নিশ্চয়ই আমরা সেটা বলব এবং তাদের নাগরিকদের তারা ফেরত নেবে সেটাই আমরা চাই।’

মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নির্যাতিত জনগণকে মানবিককারণে আশ্রয় দেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশ বিশেষ প্রশংসা ও সাধুবাদ পাচ্ছে বলেও শেখ হাসিনা এ সময় উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সকালে ডিএসসিএসসির কোর্স সমাপনী (২০২০-২১) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে, মিরপুর ‘সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্স’-এর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ডিএসসিএসসির কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. জুবায়ের সালেহীন স্বাগত বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের কমান্ড্যান্টকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদপত্র প্রদানের অনুমতি প্রদান করেন শেখ হাসিনা।

এই কোর্সে ১৬টি বন্ধুপ্রতীম দেশের ৪৩ জন বিদেশি কর্মকর্তা এবং ১০ নারী কর্মকর্তাসহ ২২৫ জন সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ শেষ করে এদিন পিএসসি অর্জন করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৩টি বন্ধুপ্রতিম দেশের এক হাজার ২০৮ জন অফিসার এ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসের কারণে সাম্প্রতিকালের বিশ্ব স্থবিরতার প্রসঙ্গ টেনে এই সময়ে কোর্স সম্পন্ন করায় শিক্ষার্থী এবং ডিএসসিসির কমান্ড্যান্টসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান।

সরকারপ্রধান আরো বলেন, নানা প্রতিকূলতা ও ঝুঁকিসহ কোভিড-১৯ মহামারির মধ্য দিয়ে আমরা নতুন বছর ২০২১-এ পদার্পণ করেছি। করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব যখন স্তিমিত, তখন দেশের মানুষের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার পাশাপাশি আমরা দেশের অর্থনীতিসহ সব উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সমর্থ হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’-এ নীতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা আন্তরাষ্ট্রীয় সুসম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে সর্বদা সচেষ্ট। আজ বাংলাদেশের সঙ্গে সকল দেশের একটা সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ঐক্য উন্নয়নে বাংলাদেশ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও গৌরবময় ভূমিকা রাখছে। তাঁর সরকারের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের পাশাপাশি আগামী বছরের ২৬ মার্চ থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শুরুর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার বাংলাদেশের একটি মানুষও আর গৃহহারা, ভূমিহীন থাকবে না। প্রতিটি মানুষেরই একটা ঠিকানা হবে এবং প্রতি ঘরেই বিদ্যুতের আলো জ্বলবে। শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সে সময় প্রতিটি মানুষের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি তারা উন্নত জীবনের ও অধিকারী হবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামই এক একটি শহরে রূপান্তরিত হবে। সেভাবেই বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, এটা কোনো কঠিন কাজ নয়। এটা করা সম্ভব। হয়তো চিরদিন থাকব না কিন্তু পরিকল্পনাটা দিয়ে যাচ্ছি।’