মুক্তিযোদ্ধা ভাতা করুণা নয়, এটা অধিকার : হাইকোর্ট
‘মুক্তিযোদ্ধা ভাতা এটা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য করুণা নয়, বরং এটা তাদের অধিকার। মুক্তিযোদ্ধারা যদি অসচ্ছল থাকে, সেটা রাষ্ট্রের জন্য লজ্জার।’
আজ মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত পৃথক আটটি রিটের ওপর রুল শুনানি শেষে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি আহমদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের পর্যবেক্ষণে এ মন্তব্য করেন।
এদিন হাইকোর্ট রুলের নিষ্পত্তি শেষে পাবনা, চাঁদপুর, কুষ্টিয়া ও যশোরের ২০৮ জন মুক্তিযোদ্ধাকে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন তৌফিক ইনাম টিপু।
পরে অমিত দাসগুপ্ত গণমাধ্যমকে বলেন, যথাসম্ভব সশরীরে হাজির হয়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই করতে হবে। যদি কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে গেজেট থেকে বাদ দিতে হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
কয়েকজন আবেদনকারী আগে ভাতা পেতেন। কিন্তু পরে তাঁদের এটা বন্ধ করা হয়েছিল। কেননা তাঁদের গেজেট হয় নাই। এ কারণে গেজেটভুক্ত ও ভাতা চেয়ে তাঁরা রিট করেন। বাকিদের যাচাই-বাছাই কমিটি মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) কাছে সুপারিশ করে। জামুকা এটি মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। কিন্তু মন্ত্রণালয় তাঁদের গেজেটভুক্ত করেনি। এটা চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা রিট করেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আরো বলেন, ‘আদালত বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা যদি অসচ্ছল থাকে, সেটা রাষ্ট্রের জন্য লজ্জার। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা এটা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য করুণা নয়, বরং এটা তাদের অধিকার।’
২০১৪ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে একটি তালিকা পাঠানো হয়। ওই তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে ২০১৬ সালে দেশের বিভিন্ন জেলার ২০৮ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বাতিল করা হয়। এরপর সেই বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে একই বছর মুক্তিযোদ্ধারা হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেছিলেন। সেই রুলের ওপর আজ রায় দিলেন হাইকোর্ট।