‘মুজিববর্ষে আমরা কোনো অন্ধকারের অপশক্তি দেখতে চাই না’

Looks like you've blocked notifications!
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে আজ বুধবার দুপুরে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি : এনটিভি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মুজিববর্ষে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উৎপাটন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চাই। মুজিববর্ষে আমরা কোনো অন্ধকারের অপশক্তি দেখতে চাই না। সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অন্ধকারের অপশক্তি পরাজিত হয়েছে। কোনো অপশক্তিকে বাংলাদেশের ক্ষমতার মঞ্চে দেখতে চাই না। মুক্তিযুদ্ধের ধারার বাংলাদেশ নির্মাণ করব এটাই মুজিবর্ষের অঙ্গীকার।’

আজ বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

কোনো অপশক্তি আর এই মসনদে বসতে পারবে না উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোনো অপশক্তিকে আর বাংলাদেশের ক্ষমতার মঞ্চে আসতে দিতে পারি না সেই শপথ মুক্তিযোদ্ধাদের নিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আমরা যারা উজ্জীবিত, আমরা মুক্তিযুদ্ধের মূলধারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ চালাব।’

মন্ত্রী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নবীন-প্রবীণদের সংগঠন। প্রবীণদের অভিজ্ঞতা ও নবীনদের প্রাণশক্তিকে আওয়ামী লীগ পরিচালিত হবে। আওয়ামী লীগে সুবিধাবাদীদের কোনো স্থান নেই। বসন্তের কোকিলদের আওয়ামী লীগের নেতা বানাবেন না।’

অনুপ্রবেশকারী, সুবিধাবাদী ও পরগাছামুক্ত আওয়ামী লীগ করতে চাই উল্লেখ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের দলের নেতা করতে হবে। ঘরের মধ্যে ঘর করবেন না। আওয়ামী লীগের পকেট কমিটি করবেন না। ত্যাগী নেতারা কোণঠাসা হলে আওয়ামী লীগ কোণঠাসা হবে। তাই ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনীর এলাকার কোটালীপাড়ায় ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিল শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল করা হয়েছে, এটাকে আমি সাধুবাদ জানাই। এটি দলের জন্য একটি ভালো দিক।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন দেশ, আর শেখ হাসিনা দিয়েছেন উন্নয়ন। একজন স্বাধীনতার জন্য আরেকজন জনগণেরকে মুক্তির জন্য। আজকে শিক্ষা দীক্ষা, উন্নয়ন, ডিজিপি, আর্থসামাজিকসহ সব দিক থেকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার জন্য বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তিনি ভূখণ্ড, সমুদ্র, মহাকাশ ও সীমান্ত জয় করেছেন। আইএমএফ আগে বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশ বলত। এখন তারা বাংলাদেশকে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধির দেশ বলে। আমাদের বর্তমান রিজার্ভ ৮৮২ কোটি টাকা। সুবর্ণজয়ন্তীতে এই রিজার্ভ ৩০ কোটি ডলার হবে। আমাদের বর্তমান রিজার্ভ পাকিস্তানের চেয়ে চার গুণ। দরিদ্র্যতা ২০ ভাগে নেমেছে। হতদরিদ্র পাঁচ থেকে ১০ ভাগ। বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন দেখে বিশ্ব অবাক চেয়ে রয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে সৎ, সাহসী, দক্ষ প্রশাসক, সফল কুটনীতিক, জনপ্রিয় নেতা শেখ হাসিনা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের দুজন সৎ নেতার মধ্যে একজন। ১০ জন প্রভাবশালী নেতার মধ্যে একজন। চারজন পরিশ্রমী নেতার মধ্যে একজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার সংসদ সদস্য এ জন্য আপনারা গর্বিত।’

অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র জয়ধরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের প্রথম পর্বের আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মেদ, শেখ হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমাযুন কবির, উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, পৌর মেয়র হাজি মো. কামাল হোসেন শেখসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে সভাপতি হিসেবে ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আয়নাল হোসেন শেখের নাম ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।