মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন দিনাজপুরের ‘সুরা মসজিদ’
মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ‘সুরা মসজিদ’। ৪০০ বছর আগের এই স্থাপত্য কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।
প্রাচীন মসজিদটির নির্মাণশৈলী এক নজর দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন হাজারো পর্যটক।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ১০ মাইল পশ্চিমে হিলি-ঘোড়াঘাট সড়কের পাশে চৌগাছা এলাকায় মসজিদটির অবস্থান।
স্থানীয় অনেকের মতে, শত শত বছর আগে জ্বিনেরা এক রাতে এই মসজিদটি নির্মাণ করে। আবার মসজিদটির কারুকার্য ও স্থাপত্যেশৈলী দেখে কেউ কেউ ধারণা করেন ১৬ শতকে সুলতানি আমলে হোসেন শাহীর শাসনকালে এটি নির্মাণ করা হয়।
মসজিদটির বাইরের দিকের আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৪০ ফুট এবং পূর্ব পশ্চিমে ২৬ ফুট। চার ফুট উঁচু মজবুত প্লাটফর্মের উপর মসজিদের কাঠামো গড়ে উঠেছে। এর প্রধান কক্ষের আয়তন ভেতরে ১৬ দশমিক ১৬ ফুট। প্রধান কক্ষের সঙ্গে যুক্ত আছে ছয় ফুট প্রশস্ত রাস্তা। পুরো মসজিদের দেয়ালে অসংখ্য খোপকাটা মৌলিক টেরাকোটার অলংকরণ যা এই ইমারতের বাহ্যিক সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
এছাড়া মসজিদের দেয়ালের সুসজ্জিত নকশা দৃষ্টি আকর্ষণ করে দর্শনার্থীদের। মসজিদটির উপরে বর্গাকার এক গম্বুজবিশিষ্ট নামাজ কক্ষ এবং পূর্ব ভাগে ছোট তিন গম্বুজবিশিষ্ট একটি বারান্দা রয়েছে।
মসজিদের উত্তর পাশে ৩৫০ থেকে ২০০ গজ আয়তনের একটি দীঘিরপাড় রয়েছে। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার দর্শনার্থী এই মসজিদটি দেখার জন্য ছুটে আসেন।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ সেকেন্দার আলী বলেন, ‘এই মসজিদের সৃষ্টির পেছনে অনেক ইতিহাস রয়েছে। আগামী প্রজন্মের জন্য মসজিদটি সংরক্ষিত রাখতে হবে। মসজিদের কিছু কিছু সংস্কার কাজ এখনও বাকি আছে। উপজেলা প্রশাসন এরইমধ্যে বেশ কিছু সংস্কার কাজ শেষ করেছে। বাকি কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করে মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে পারলে দর্শনার্থীদের সংখ্যা আরো বাড়বে।’
মসজিদের পেশ ইমাম মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী মসজিদটি দেখার জন্য আসেন। অনেকে নিজেদের বিভিন্ন মানত পূরণ করার জন্য এখানে এসে রান্না করে আশেপাশের লোকজনকে খাওয়ান।’