মোংলায় কিশোরকে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

Looks like you've blocked notifications!
নির্যাতনের শিকার হওয়া কিশোরের পিঠে লাঠির আঘাতের চিহ্ন। ছবি : এনটিভি

মোংলায় গাছের পাতা পাড়ায় ১৬ বছরের এক কিশোরকে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বিভাগের হাবিলদার মো. বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নির্যাতনের শিকার কিশোর মো. বাবু (১৬) সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে।

এরপর তাকে উদ্ধার করে ১০টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মুমূর্ষু অবস্থায় ভর্তি করা হয়। সেখানে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তার জ্ঞান ফিরলেও সন্ধ্যার পর আবারও সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে রাত ৯টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এদিকে এ ঘটনায় ওই কিশোরের বাবা ঠেলাগাড়ি চালক মন্টু সরদার রাতে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

নির্যাতনের শিকার কিশোরের বাবা মন্টু সরদার ও স্থানীয়রা জানান, কিশোর বাবু বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পুরাতন বন্দর এলাকার আবাসিকের মধ্যে মেহগনি গাছের পাতা পাড়তে যান। গাছ থেকে পাতা পাড়ার এক পর্যায়ে বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের হাবিলদার মো. বেল্লাল হোসেন তাকে গাছ থেকে নামিয়ে বেদম মারপিট করেন। হাত পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় চালানো নির্যাতনে কিশোর বাবু সেখানে অচেতন হয়ে পড়ে। অচেতন হয়ে পড়ায় বেল্লাল কিশোরের হাত পায়ের দড়ি খুলে দিয়ে সরে পড়েন। পরে খবর পেয়ে তার পরিবার তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. মেহেদী হাসান বলেন, কিশোর বাবুর শরীরে অসংখ্য লাঠি দিয়ে পিটানের আঘাত রয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় পুরোপুরি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে কিশোর বাবু। এরপর তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ায় রাত ৯টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার কিশোর বাবু ভাড়ায় ভ্যানচালায়। তার বাবা মন্টুও ঠেলাগাড়ি চালিয়ে সংসার চালান।

এ বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বিভাগের হাবিলদার মো. বেল্লাল হোসেন নির্যাতনের কথা স্বীকার করে বলেন, নিউজ করবেন কেন? রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দরা বসে বৃহস্পতিবার এর মিটমাট করে দিবেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী বলেন, এ ঘটনায় নিরাপত্তা বিভাগের হাবিলদার মো. বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের হাবিলদার মো. বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে কিশোর নির্যাতনের একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।