মোংলায় রোববার থেকে ৮ দিনের কঠোর বিধি-নিষেধ

Looks like you've blocked notifications!
বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ফাইল ছবি

বাগেরহাটের মোংলায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। তাই এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাল রোববার থেকে আট দিনের কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। কারণ গত দুইদিনে করোনা পরীক্ষায় যে রিপোর্ট এসেছে তা অত্যন্ত ভয়ানক।

গতকাল শুক্রবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিলে তাদের মধ্যে ১৪ জনেরই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শনাক্তের হার ৭০ শতাংশ। এ ছাড়া আজ শনিবার নমুনা দেওয়া ৪২ জনের মধ্যে পজিটিভ হয়েছে ৩১ জনের। শনাক্তের হার ৭৩.৮১ শতাংশ।

দুই সপ্তাহ ধরে মোংলায় করোনা শনাক্তের হার ক্রমেই বাড়ছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে আজ ছিল সর্বোচ্চ রেকর্ড।

মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্টের মাধ্যমে গত এক মাস নয় দিনে ১৮২ জন করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ২০ এপ্রিল থেকে মোংলায় র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট শুরু হয়। র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্টের মাধ্যমে মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে এর রিপোর্ট দেওয়া হয়। এর আগে নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হতো। এতে সময় বেশি লাগতো। এর নতুন এ পদ্ধতিতে নমুনা দেওয়ার পর আধা ঘণ্টার মধ্যে রোগী তার রিপোর্ট জানতে পারছেন।

ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, এই মুহূর্তে কঠোর লকলাউনের কোনো বিকল্প নেই। কারণ গত সপ্তাহেও করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখানে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া এখানে সরকারের দেওয়া বিধি-নিষেধ মানছে না কেউ। যার কারণে সংক্রমণের হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি ও ক্রমান্বয়ে করোনা পরিস্থিতি খুব খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ ছাড়া সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব নয়। সেজন্য ৩০ মে রোববার থেকে পরবর্তী আট দিন কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিধি-নিষেধগুলো হলো, বাধ্যতামূলক মাস্কের ব্যবহার, মাস্কবিহীন কাউকে পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে আইনানুগ শাস্তির ব্যবস্থা করা। পৌর শহরে প্রবেশ সংকুচিত ও সীমিত থাকবে, জরুরি পরিবহণ ব্যতীত কোনো যানবাহন ঢুকবে না, বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। ওষুধ ও জরুরি কৃষিপণ্য ব্যতীত সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। কাঁচা ও মুদি বাজার, মাংস, মাছ ও ফলের দোকান প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। অন্য এলাকা থেকে বিভিন্ন নৌযানে আসা কেউ পৌর এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। নদী পারাপারের ক্ষেত্রে  সর্বোচ্চ ১৬ জনকে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় পারাপার করতে হবে।

এ সব বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে ইউএনও স্থানীয় সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।