ময়মনসিংহে নিজ গ্রামে টি এইচ খানের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন

Looks like you've blocked notifications!
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার নিজ গ্রাম ঔটিতে মঙ্গলবার বিকেলে টি এইচ খানের জানাজা হয়। ছবি : এনটিভি

বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও মন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তোফাজ্জাল হোসেন (টি এইচ) খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ঔটি গ্রামে নিজ বাড়ির আঙিনায় পারিবারিক মসজিদের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

এর আগে ঔটি ঈদগাহ মাঠে তাঁর তৃতীয় জানাজা হয়। এতে এলাকার সাধারণ মানুষ, বিএনপি, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা অংশ নেন।

জানাজার সময় বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগাঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মরহুমের ছেলে সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল এইচ খান, হালুয়াঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক সায়েম,  ফুলপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল করিম রাসেল,  বিএনপি নেতা আনোয়ার আজিজ টুটুলসহ অন্যান্যরা। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় হালুয়াঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা হয়।

মরহুম টি এইচ খানের প্রথম জানাজা হয় ঢাকায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে।

গত রোববার বিকেল ৫টায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১০২ বছর বয়সি এই আইনজ্ঞ।

দেশবরেণ্য ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই আইনবিদ ১৯২০ সালের ২১ অক্টোবর ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলাধীন ঔটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪০ সালে বিচারপতি টি এইচ খান ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন এবং ১৯৪২ সালে তৎকালীন কলকাতা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তি হন। ১৯৪৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ১৯৪৬ সালে স্নাতকোত্তর পাস করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি আইন পেশায় যোগ দেন।

১৯৫১ সালের ১৪ মার্চ বিচারপতি টি এইচ খান হাইকোর্টের আইনজীবী হন। আইন পেশা ছাড়াও তিনি প্রথম জীবনে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ, ঢাকার জগন্নাথ কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন ও আইন বিষয়ে শিক্ষকতা করেন।

বিচারপতি টি এইচ খান ১৯৬৮ সালে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ১৯৭৩ সালের জুলাই মাস থেকে পুনরায় আইন ব্যবসায় ফিরে আসেন। ১৯৭৪ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে তিনি পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর আইন, শিক্ষা, ধর্ম, ভূমি ও রাজস্ব এবং ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদের নেতৃত্বে নতুন সামরিক আইন জারি করা হয়। তখন তিনি আবার আইন পেশায় ফিরে যান। ১৯৮৬ সালে এরশাদের নির্বাচনে বিরোধিতা করায় গ্রেপ্তার হন।

বিচারপতি টি এইচ খান ১৯৯২ সালে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন। এই পদে তিনি ২০১১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিএনপির প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান।