যশোরের কৃষকদের আশা দেখাচ্ছে নতুন ফসল ‘চিয়া’

Looks like you've blocked notifications!

যশোরের মণিরামপুরে ‘চিয়া’ নামের একটি নতুন ফসলের চাষ শুরু হয়েছে।  দেখতে অনেকটা তিলের মতো ‘চিয়া’, দানা জাতীয় রবি মৌসুমের ফসল। এ অঞ্চলে নতুন এ ফসলের চাষ করেছেন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ভোজগাতি গ্রামের হাফিজুর রহমান।

হাফিজুর রহমানের বড় ভাই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সহযোগিতায় পাওয়া বীজ দিয়েই ৫০ শতাংশ জমিতে তিনি এ ফসলের চাষ করেছেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।

প্রফেসর ড. মশিউর রহমান জানান, চিয়া বীজের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বন্ধুদের কাছে জানতে পেরে তিনি চিয়ার ওপর গবেষণা করতে আগ্রহী হন।

ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘২০১৬ সালে বন্ধুদের মাধ্যমে কানাডা থেকে বীজ এনে দেশের জলবায়ু ও মাটিতে চাষের জন্য গবেষণা করে ২০১৭ সালে সফলতা পাই।’

তিনি গ্রামের বাড়িতে তাঁর ভাই হাফিজুর রহমানকে দিয়ে চাষ শুরু করেন। ‘চিয়া’র দামও অনেক বেশি। এটি সাধারণত কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, আমেরিকা, চিলি, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের উন্নত দেশে চাষ হয়। চিয়ার দাম বেশি হওয়ায় তা খাওয়া দেশের নিম্ন বা মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে।

বিদেশ থেকে আমদানি করে ঢাকার অভিজাত শপিংমলে কেজিপ্রতি দুই হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হয় চিয়া। চিয়ার বীজ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেভাবে ইসুবগুলের এর ভুসি পানিতে ভিজিয়ে খেতে হয়, সেভাবে চিয়া পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এক ধরনের জেলি বের হয়। ওই জেলি খেতে হয়। এ ছাড়া রুটি, পুডিং, কেক বা পাউরুটির সঙ্গেও তা খাওয়া যায়।

হাফিজুর রহমান বলেন, ‘জমি প্রস্তুত করে কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে বীজ ছিটিয়ে বপন করা হয়। তিন থেকে চার ফুট উচ্চতার এ উদ্ভিদের প্রায় ১৩ ইঞ্চি ঊর্ধ্বাংশ বীজের ভারে নুইয়ে পড়েছে। কিছুদিনের মধ্যে আমি এগুলো কাটব।’

হাফিজুর রহমান জানান, বিঘাপ্রতি ২০০ গ্রাম বীজ লাগে। তিল ও তিশি জাতীয় ফসলের মতো রোদে শুকিয়ে মাড়িয়ে বীজ ছাড়ানোর মতো চিয়া বীজ বের করতে হয়।

পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম বলে কীটনাশকের ব্যবহার লাগে না। দুই-একবার সেচ দিলেই হয়। জমি প্রস্তুতের আগে এবং বীজ বপনের ১৫-২০ দিন পরে সামান্য ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি প্রয়োগ করতে হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার জানান, পুষ্টিগুণ সম্পন্ন চিয়া আগামী রবি মৌসুমে প্রতি ইউনিয়নে চাষের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হবে।